Home » পদ্মশ্রী পেলেন কামতাপুরী ভাষার পথিকৃত ড. ধর্ম নারায়ন বর্মা

পদ্মশ্রী পেলেন কামতাপুরী ভাষার পথিকৃত ড. ধর্ম নারায়ন বর্মা

সময় কলকাতা ডেস্ক : কামতাপুরী ভাষা স্বীকৃতির দাবিতে তিনি জীবনভর আন্দোলন করেছেন। যুক্তি দিয়ে বুঝিয়েছেন কেন এই ভাষায় আলাদা মর্যাদা পাওয়া উচিত। বিশিষ্ট ভাষাবিদদের সামনে বারবার সওয়াল করেছেন কামতাপুরী বাংলার উপভাষা নয়। এজন্য একসময় তাঁর গায়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী তকমা লাগানোতেও তিনি পিছিয়ে যাননি। বরং আলাদা ভাষার যোগ্যতা প্রমাণ করতে তিনি কামতাপুরী ব্যাকরণ রচনা করেছেন। সেই দীর্ঘ সংগ্রামের আজ স্বীকৃতি। ভারত সরকারের ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত করা হল কামতাপুরী ভাষাচর্চার অন্যতম প্রধান পথিকৃত ড. ধর্ম নারায়ন বর্মাকে।

‘পদ্মশ্রী’র নিয়ম বলছে, জীবিত থাকলে পদ্মশ্রী প্রাপক ছাড়া অন্য কারো হাতে তা দেওয়া হয় না। তেমনি প্রাপকের বাড়ি গিয়ে পদ্মশ্রী সম্মান হাতে তুলে দেওয়ার নজিরও নেই বললেই চলে। কিন্তু নিয়ম তো তৈরি হয় মানুষের জন্যেই আবার তা সংশোধিত হয় মানুষের হিতার্থেই। তাই আজ পদ্মশ্রী ইতিহাসে বিরলতম ঘটনার সাক্ষী থাকল বাংলা তথা গোটা দেশ।

চিঠি মারফত আগেই জানানো হয়েছিল ভাষাবিদ রাম নারায়ন বর্মার পদ্মশ্রী পাওয়ার সুখবর। পদ্ম-সম্মান নেওয়ার জন্য দিল্লিতে আমন্ত্রণও পান। কিন্তু বর্তমানে বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত হয়ে প্রায় শয্যাশায়ী উত্তরবঙ্গের বিশিষ্ট এই বুদ্ধিজীবী। সেকারণেই পদ্মশ্রী নিতে দিল্লি যেতে পারবেন না বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে জানিয়ে দেন তার পরিবার। অবশেষে ৮৬ বছর বয়সী ধর্ম নারায়ণের বাড়িতে এসে আজ পদ্মশ্রী সম্মান তুলে দিলেন কোচবিহার জেলা শাসক পবন কাদিয়ান। এছাড়াও এদিন উপস্থিত ছিলেন তুফানগঞ্জ মহকুমা শাসক রোহণ লক্ষীকান্ত যোশী ও তুফানগঞ্জ ২ -নং ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক প্রসেনজিৎ কুণ্ডু। জীবন সায়াহ্নে এসে কামতাপুরী ভাষা স্বীকৃতির দাবিতে নিরলস লড়াইয়ের স্বীকৃতি হিসেবে পদ্মশ্রী সম্মান হাতে পাওয়ায় খুশি পরিবারের লোকজন থেকে শুরু করে গোটা তুফানগঞ্জবাসি।

প্রসঙ্গত, কোচবিহার জেলার বকক্সিরহাট থানার হরিপুর গ্রামের বাসিন্দা ধর্ম নারায়ন বর্মা। তিনি পেশায় তুফানগঞ্জ এন এম হাই স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক। নিজেদের কাছের মানুষ পদ্মশ্রী পুরস্কার পাওয়ায় গোটা উত্তরবঙ্গের মানুষ যেন খুশির উৎসবে মেতেছেন।

About Post Author