Home » হোলির এই বিশেষ দিনটিকে ভারতবর্ষের কোথায় কি নামে ডাকা হয় জানেন?

হোলির এই বিশেষ দিনটিকে ভারতবর্ষের কোথায় কি নামে ডাকা হয় জানেন?

সময় কলকাতা ডেস্ক, ৭ ফেব্রুয়ারিঃ দোলযাত্রা মানেই যেন বসন্তের আহ্বান। এই উৎসবটি বাঙালীদের বসন্ত উৎসব নামেই পরিচিত। প্রতি বছর বাঙালীরা এই দিনটিতে রং খেলার আনন্দ- উৎসবে মেতে ওঠে। এই দিনটিতে বাঙালিরা একে অপরকে নানান রঙে রাঙিয়ে দেয়। এই দিনটিতে বাতাসে যেন একটাই সুর ভেসে ওঠে “রাঙিয়ে দিয়ে যাও যাও যাও গো এবার যাবার আগে”। এই বসন্ত উৎসবকে স্বাগত জানাতে প্রকৃতি যেন এক বর্ণিল সাজে সেজে ওঠে। মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্যের জন্ম হয়েছিল এই পূর্ণিমা তিথিতে,তাই দোল পূর্ণিমাকে গৌরী পূর্ণিমা বলা হয়। এই তিথিতে বৃন্দাবনে আবির ও গুলাল নিয়ে শ্রী কৃষ্ণ,রাধা এবং তাঁর গোপীগনের সঙ্গে হোলি খেলেছিল। আর সেই ঘটনা থেকেই উৎপত্তি হয় দোল খেলার।

দোল পূর্ণিমার মূল আকর্ষণ আবির। এই দিনটি আবিরের রঙে রাঙিয়ে দেওয়ার দিন। বাঙালির দোল যাত্রাটি রাধা কৃষ্ণকে ঘিরেই। ভারতবর্ষ জুড়ে হোলিকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে অসংখ্য লোকগাথা। যার মধ্যে মিশে আছে অসংখ্য জনশ্রুতি। কি সেই জনশ্রুতি আর কি বা তার নাম? দোলযাত্রা যেহেতু রঙের উৎসব,তাই এই উৎসবের প্রাণ কেন্দ্র আবির। এই দিন সকাল থেকেই আট থেকে আশি সবাই মেতে ওঠে আবির খেলায়। আগে আবির দিয়ে রং খেলার প্রচলন বেশি থাকলেও পরে আবিরের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে তরল রঙ। দোল পূর্ণিমা ভারতবর্ষের বিভিন্ন  জায়গায় ভিন্ন নামে অভিহিত।


মহারাষ্ট্রে হোলিকে এক বিশেষ নামে ডাকা হয়। স্থানীয় লোকেরা হোলিকে শিমোগা বা রং পঞ্চমী বলে অভিহিত করে। প্রায় এক সপ্তাহ জুড়ে চলে এই অনুষ্ঠান।

বাংলায় একে দোল নামে অভিহিত করা হয়। কোথাও আবার এই দোল পূর্ণিমাকে দোল যাত্রা বলে। রাধা ও কৃষ্ঞের বিশেষ প্রেম কাহিনী বিশেষ লোকগাথা দোল যাত্রায় ধরা পরেছে। পাশাপাশি মহিলারা হলুদ শাড়ি পরে নিজেদের ধরা দেন । হলুদ আসলে বিশেষ সমৃদ্ধির পরিচয় বহন করে।

বাংলায় দোল যাত্রায় আবিরের প্রচলন থাকলেও মহারাস্ট্রে শিমোগা বা রঙ পঞ্চমী খেলা হয় জল ও রঙ সহকারে।

রাজস্থানে হোলি আবার বিশেষ নামে পরিচিত। রাজকীয় ভাবে ঘোড়া সাজিয়ে ব্যান্ড পার্টির সহযোগে অভিনব শোভাযাত্রা আয়োজন করা হয় হোলি উপলক্ষ্যে। তাই এই হোলিকে রয়্যাল হোলি বলা হয়ে থাকে।

পাঞ্জাবের হোলি হোল মহল্লা নামে পরিচিত। পাঞ্জাবের এক বিশেষ শিখ সম্প্রদায় তারা এক বিশেষ মার্শাল আর্ট সহকারে শিখ যোদ্ধাদের এদিন শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে। এদিন পাঞ্জাববাসী বিশেষ সুরের সংগীতের দ্বারা এবং নৃত্যের দ্বারা পালন করে এই হোলি পালন করে থাকেন।

উওরাখন্ডে হোলি বৈথাকি হোলি,খাদি হোলি নামে পরিচিত। এদিন উত্তরাখন্ডবাসী বিশেষ পোষাকে পরে একে অপরকে রং বিনিময় করেন।

ওড়িশায় হোলিকে দোলা নামে ডাকা হয়। এদিন পুরীর জগন্নাথ দেবকে দোল গোবিন্দ নামে বিশেষভাবে পুজো করা হয়। হলুদ রঙের সঙ্গে জল মিশিয়ে সেই জল সাধারনের উদ্দেশ্যে ছিটিয়ে জগন্নাথকে নিয়ে বিশেষ মিছিল বার করা হয়।

বিহারে হোলিকে ফাগুয়া নামে অভিহিত করা হয়।এদিন উৎসবে জলের সঙ্গে বিশেষ রঙ মিশিয়ে খেলায় মাতেন বিহারবাসী।উত্তরপ্রদেশে হোলিকে লাঠমার হোলি নামে অভিহিত করা হয়। মহিলারা এই দিনে হাতে লাঠি সহকারে পুরুষদের সঙ্গে বিশেষ খেলায় মাতেন।

About Post Author