Home » সরফরোশি কি তমন্না আব হামারে দিল মে হ্যায়

সরফরোশি কি তমন্না আব হামারে দিল মে হ্যায়

সময় কলকাতা ডেস্ক, ১৪ আগস্ট : ” সরফরোশি কি তমন্না আব হামারে দিল মে হ্যায় ” -স্বাধীনতা দিবস  এলেই এই একটি গান আসমুদ্রহিমাচলে শোনা যেতে থাকে। দেশাত্মবোধক গান হিসেবে “সরফরোশি কি তামান্না”গানটির জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী। ” সরফরোশি কি তমন্না” কবিতাটির ছত্রে ছত্রে দেশাত্মবোধ আর দেশমাতৃকার চরণে উৎসর্গীকৃত  হওয়ার অঙ্গীকার ।  বিংশ শতকের গোড়ার দিকে  লেখা  দেশাত্মবোধক হিন্দি কবিতাকে বিভিন্ন সুরে বিভিন্ন সময় গাওয়া হয়েছে। চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত হয়েছে গানটি। এই গানের লেখকের সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি,অনেকে জানি না, অনেকেই ভুল জানি,অনেকে জেনেও ভুলতে বসেছি।

এই কবিতার রচয়িতা বিসমিল আজিমাবাদী ছিলেন  বিহারের বাসিন্দা। পাটনার  উর্দু কবি বিসমিল ১৯২১ সালে তিনি দেশাত্মবোধক কবিতা ‘সরফরোশি কি তামান্না’ রচনা করেন। স্বাধীনতা সংগ্রামী রাম প্রসাদ বিসমিল, ভারতে ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে সংগ্রামের  অঙ্গ হিসাবে  কবিতাটিকে অমর করে রেখেছেন কারণ তার নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে  কবিতাটি। অনেকেরই ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে  রামপ্রসাদ বিসমিল এই গানটির রচয়িতা।১৯২৬ সালে কাকোরি বিপ্লব সংঘটিত হয় যেখানে যুক্ত অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন রামপ্রসাদ বিসমিল এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে  ব্রিটিশ সরকার কাকোরি ষড়যন্ত্র মামলা শুরু করে। এই মামলার বিচারে পণ্ডিত রামপ্রসাদ বিসমিল, রাজেন্দ্র লাহিড়ী, ঠাকুর রৌশন সিং, আসফাকউল্লা খানের ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়। ১৯ ডিসেম্বর ১৯২৭ সালে মৃত্যুর দণ্ডাজ্ঞাপ্রাপ্তদের  গোরখপুর জেলে ফাঁসি দেওয়া হয়। কথিত আছে , রামপ্রসাদ বিসমিল সহ স্বাধীনতা সংগ্রামীরা মৃত্যুর আগে ফাঁসিমঞ্চে যাওয়ার সময় এই গান গেয়েছিলেন।তবে গানটির রচয়িতা বিসমিল আজিমাবাদী।

সরফরোশি শব্দবন্ধ দিয়ে শুরু হওয়া কবিতাটি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের তৎকালীন  তরুণ স্বাধীনতা সংগ্রামীদের উদ্দেশ্যে রচিত হয়েছিল।
কবিতার সঙ্গীতরূপ আশফাকুল্লাহ খান, শহীদ ভগৎ সিং এবং চন্দ্রশেখর আজাদের পাশাপাশি বিংশ শতকের   তৃতীয় দশকের বা তারপর পরবর্তী সময়ের  স্বাধীনতা সংগ্রামী ও তরুণ প্রজন্মকে প্রবলভাবে প্রভাবিত করে।

স্বাধীনতার আগে এই কবিতাটি ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতীক হয়ে ওঠে এবং প্রায়শই ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে সমাবেশ ও প্রতিবাদে আবৃত্তি করা হয়।কবিতাটির শিরোনামের অর্থ “ত্যাগের আকাঙ্ক্ষা” এবং এটি ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আবেগ এবং প্রতিশ্রুতিকে চিত্রিত করে যারা স্বাধীনতার জন্য তাদের জীবন দিতে ইচ্ছুক ছিল।কবিতার শুরুর লাইন, “সরফরোশি কি তমন্না আব হামারে দিল মে হ্যায়/দেখনা হ্যায় জোর কিতনা বাজু-ই-কাতিল মে হ্যায়,” – কবিতাটি আত্মত্যাগের আকাঙ্ক্ষা এবং অত্যাচারীর মোকাবিলা করার ইচ্ছা প্রকাশ করে।
কবিতাটি স্বাধীনতা আন্দোলনে বিসমিলের সমসাময়িক ভগৎ সিং, রাজগুরু এবং সুখদেব সহ বিপ্লবীদের  আত্মত্যাগের কথা তুলে ধরেছে।  ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতীয় জনগণের বৃহত্তর সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করার আহ্বানের কথা বলে অসামান্য দেশপ্রেমের ভাবনা যুক্ত এই লেখা।কবিতাটির আলোড়ন সৃষ্টিকারী বার্তা এবং শক্তিশালী ভাষা একে ভারতীয় বিপ্লবীদের জন্য একটি সঙ্গীত হিসেবে গণ্য করা হয়ে এসেছে এবং গানটি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম প্রতীক হিসাবে পালিত হচ্ছে আজও।

About Post Author