Home » জরি শিল্পীরা আজ বিপর্যস্ত কেন?

জরি শিল্পীরা আজ বিপর্যস্ত কেন?

জরি শিল্প, সময় কলকাতা: স্বপন ভৌমিক (মাজদিয়া)।  জরি শিল্প অর্থাৎ প্রতিমা সজ্জার জন্য মুকুট থেকে শুরু করে আনুষঙ্গিক অলংকার ,বস্ত্র তৈরির শিল্প। চন্দননগর সংলগ্ন নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জ ব্লক এর বাবলা বনের প্রায় একশ কুড়িটি পরিবার জারি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। এই সকল পরিবারের রুটিরুজি চলে জরি শিল্প থেকেই।

মূলত প্রতিমা সজ্জার ক্ষেত্রে প্রতিমার বস্ত্র তৈরি করাই এই শিল্পীদের মূল ব্যবসা। কৃষ্ণনগরের জরি শিল্পীরা যেমন তৈরি করে প্রতিমার মুকুট এবং আনুষঙ্গিক অলংকার। তেমনি বাবলা বনের জরি শিল্পীরা তৈরি করে বস্ত্র পাশাপাশি মুকুট ও অলংকার।  একটা সময় ছিল, এর জরি শিল্পীদের শিল্পকর্মের চাহিদা সারা বিশ্বজুড়ে। শুধু আঞ্চলিকভাবে এই জরি শিল্পকর্ম রপ্তানি হতো না, রপ্তানি হতো বিভিন্ন রাজ্যে, এমনকি দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও।

কিন্তু বিগত দুবছর ধরে করোনার কালো থাবা তাদের জীবনেও নিয়ে এসেছে অন্ধকার। সদ্য পুজোর মরশুম গেল অথচ সেই অর্থে বরাত পাইনি এই শিল্পীরা। বর্তমানে চরম সংকটে দিন কাটাচ্ছেন এই শিল্পীরা। শীতের মরশুম, রাজ্যজুড়ে এই সময় হয় একাধিক মেলা। হস্তশিল্প মেলা ,কারিগরি মেলা সহ বিভিন্ন জায়গায় একাধিক উৎসবে এই সব শিল্পীরা তাদের শিল্পকর্ম নিয়ে উপস্থিত হতেন। পাওয়া যেত সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সাহায্য। কিন্তু করোনার করাল গ্রাসে সেই সমস্ত মেলা এখন বন্ধ। ফলে দু’বেলা দু’মুঠো জোগাড় করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই সমস্ত শিল্পীর পরিবারের কাছে। একটা সময় কলকাতার বড়বাজারের মহাজনরা এদের কাছ থেকে কিলোগ্রাম দরে শিল্পকর্ম কিনতে। কিন্তু বড়বাজারের প্রায় ঝাঁপ বন্ধ। বৃন্দাবন, মায়াপুর, নবদ্বীপ সহ বিভিন্ন ধর্মীয় স্থানে প্রচুর পরিমাণে এই শিল্পের পোশাক বিক্রি হতো কিন্তু ধর্মীয় স্থান বন্ধ থাকায় ব্যবসাও বন্ধ। তবুও থেমে নেই এই শিল্পীর কাজকর্ম ।এখনও তারা আশায় দিন গুনছেন এবং নিজেদের তৈরি শিল্পের কাজ গুলি করে যাচ্ছেন মনোযোগ সহকারে। আশা কবে আবার সব স্বাভাবিক হবে এই শিল্পের ক্রন্দন বন্ধ হবে।

About Post Author