সময় কলকাতার ডেস্ক: স্বপন ভৌমিক :পৌষ মাস প্রায় অন্তিম লগ্নে, চলতি সপ্তাহের শুক্রবারে পৌষ সংক্রান্তি। পৌষ সংক্রান্তি কে গ্রাম্য ভাষায় বলা হয় পৌষ বাউরী অর্থাৎ ওই দিনটিতে বাঙালির ঘরে ঘরে চলে পিঠে পুলি উৎসব।গ্রামাঞ্চলে এমনও বাড়ি আছে ওই দিনই হেঁশেল এ অন্য কোন অন্ন রন্ধন হয় না। অর্থাৎ সেইদিন পিঠে পুলি হল মূল অন্ন। পিঠে অথবা পুলি যাই তৈরি হোক না কেন তার মূল উপাদান খেজুর গুড়। আর খেজুর গুড়ের জন্য অবশ্যই প্রয়োজন হাঁড়ির। সে কারণেই পালেদের এখন নাওয়া-খাওয়ার কোন সময় নেই। এই সময় প্রচুর পরিশ্রম করে হাঁড়ি বিক্রি করে সারা বছরের খোরাক জুটিয়ে নেবেন পালেরা।
মাজদিয়ার হাটে তাই এখন প্রচুর পরিমাণে হাঁড়ির যোগান। মাজদিয়ার হাটে হাঁড়ি বিক্রি করতে আসা ষষ্ঠী পাল জানালেন, যে তারা এই সময় দুটো পয়সার মুখ দেখতে পান। কারন প্রচুর হাঁড়ি, খেজুর গুড়ের জন্য বিক্রি হয় এই পৌষ পার্বণের সময়।
হাঁড়ি প্রচুর বিক্রি হলেও মুনাফা এখন তেমন হয় না। আগে পালেরা মাটি পেয়ে যেতেন খুব সহজে কিন্তু এই সময় মাটি কিনতে হয় প্রায় ট্রাক্টর পিছু 800 টাকা। মাটির মধ্যেও আবার রকম ভেদ আছে। বেলে মাটি, দোআঁশ মাটিতে হাঁড়ি তৈরি করা যায় না দরকার মোটা এঁটেল মাটি। মোটা এঁটেল মাটি না হলে চটকে কাদা করা যায় না, আর কাদা না হলে হাঁড়ি ভালো পুড়ে শক্ত হবে না। আগে পা দিয়ে মাটি মাখানো হত কিন্তু এখন সমস্ত জায়গায় মেশিনের ব্যবহার, ফলে মেশিন চালানোর জন্য জ্বালানির খরচ যুক্ত হয়েছে হাঁড়ির দাম এর সঙ্গে। এদিকে হাঁড়ির দাম বৃদ্ধি হলে ক্রেতার দেখা পাওয়া মুশকিল।
কাঁচা মাটির হাঁড়ি পোড়াতে ব্যবহার করা হতো গাছের ডালপালার জ্বালানি। এখন সেই জ্বালানিও কিনতে হয় চড়া দামে। সবকিছুর খরচ বেড়েছে অথচ হাঁড়ির দাম বাড়েনি। ফলে মুনাফার পরিমাণ কমতে কমতে তলানিতে এসে ঠেকেছে। সমস্ত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও প্রতিবছর পৌষ সংক্রান্তির আগে পালেরা হাঁড়ির পসরা সাজিয়ে চলে আসেন মাজদিয়ার হাটে ।শুধু মাজদিয়া নয় ,নদীয়ার বিভিন্ন হাটেও এই সময় জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চলে আসেন পালেরা।
More Stories
Durga Puja: পুজো শুরু ষষ্ঠী থেকে, তবে বিশেষ কেন পঞ্চমী?
উত্তরবঙ্গের ক্রান্তির সাহাপরিবারের দুর্গাপুজো কেন অনন্য?
জলপাইগুড়ির ইন্ডিয়া গেট নজর কাড়বে পুজোয়