Home » মহিলা পুরোহিত দিয়ে অভিনব বিয়ে, চিরাচরিত নিয়ম ভেঙে করা হল না সম্প্রদান

মহিলা পুরোহিত দিয়ে অভিনব বিয়ে, চিরাচরিত নিয়ম ভেঙে করা হল না সম্প্রদান

সময় কলকাতা ডেস্ক : অগ্নিসাক্ষী করে বরকনেকে সাতপাকে ঘোরানো হলেও হল না কন্যা সম্প্রদান। মায়ের ঋণ শোধ করার নিয়মও বাদের খাতায়।এভাবেই আভিনব নিয়মে বাড়ির  মেয়েকে শ্বশুর বাড়িতে পাঠাল চাঁদপাড়ার বৈদ্য পরিবার । চিরাচরিত সামাজিক নিয়ম না মেনে, সম্পূর্ণ নতুন নিয়মে চাঁদপাড়ায় আয়োজিত হল বিয়ের আসর । আর পাঁচটা বিয়ের অনুষ্ঠানের মতোই সেজে উঠেছিল চাঁদ পাড়ার বৈদ্য বাড়ী । কিন্তু বিয়ের আসরে দেখা গেল সম্পূর্ণ অন্য নিয়ম,পুরুষশাসিত সমাজে মহিলারা অবহেলিত, আর সেই কারণেই সমাজকে নতুন আলোর দিশা দেখাতে নতুন পথে হাটছেন চাঁদপাড়ার বৈদ্য বাড়ি । বিয়ের আসরে পুরুষ পুরোহিতের বদলে দেখা গেল মহিলা পুরোহিতকে। সমস্ত নিয়ম-নীতি মেনে মহিলা পুরোহিত কে দিয়ে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করালেন বৈদ্য বাড়ির সদস্যরা ।

বিয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম কন্যা সম্প্রদান, কিন্তু এই বিয়েতে হল না কন্যা সম্প্রদান । এবিষয়ে বৈদ্য বাড়ির সদস্যরা বলেন , ” মেয়েরা কোন পণ্য নয় অতএব কন্যাদানের যে রীতি আছে সেটাকে আমরা মানি না ।, কারণ মেয়েরাও মানুষ, দান কথার অর্থ কোন বস্তুকে দিয়ে দেওয়া। মেয়েরা কোন বস্তু নয় ।” এছাড়াও বিয়ের পরে মায়ের ঋণ শোধ করার একটি নিয়ম থাকে, কিম্তু “মায়ের ঋণ কখনো শোধ করা যায় না । সেজন্য নতুন নিয়মে বিয়ের প্রথা শুরু করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য ।

নববধূ সারিকা বৈদ্য বলেন, “আগেকার সমাজিক নিয়মে মেয়েদের বিয়ে হত। তারপর তারা সংসার সামলাত । এখনকার যুগে মেয়েরা সব কিছুই করতে পারে । যেমন একটি মেয়ে চাঁদে যেতে পারে, দেশ চালাতে পারে, রাজ্য চালাতে পারে, ঠিক তেমনি মেয়েরা পৌরোহিত্যও করতে পারে । ” নববধূর স্বামী তরুণ কর্মকার বলেন, “আমরা যে নিয়ম পালন করছি আমাদের জানা উচিত কেন পালন করছি । আর বিয়ের পর মেয়েরা যখন শ্বশুর বাড়ি যায় মায়ের কাছে চাল দিয়ে। এভাবে মা-বাবার ঋণ কখনো শোধ করা যায় না, এটাই আমি মনে করি ।

মহিলা পুরোহিত অনিতা মুখোপাধ্যায় জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে দুর্গাপুজো করেন । অনেক দূরে দূরে তাকে আমন্ত্রণ করা হয় পুজো করার জন্য । দীর্ঘদিন ধরে যে চিরাচরিত  নিয়ম চলে আসছে মূলত সেই নিয়মেরই বদল ঘটাতে চান তিনি । তিনি আরও বলেন মেয়েরা চাইলে সব পারে এটাই বোঝানোর জন্য তার এই পদক্ষেপ । এ বিষয়ে নববধূর দাদা দিলীপ বৈদ্য জানান, দীর্ঘদিন ধরে পুরুষশাসিত সমাজে এই প্রথা চলে আসছে, মূলত মানুষের চিন্তা ধারাকে বদলানোর জন্যই বৈদ্য বাড়ির এই নতুন উদ্যোগ ।

About Post Author