সময় কলকাতা ডেস্ক : অসম্মানিত বাঙালির স্বাভিমান না বলে বলা ভালো অসম্মানিত বোধ করা শিল্পীর আত্মমর্যাদাবোধ ।৯০ বছরের সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় , আর ৬৮ বছরের অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় পদ্মশ্রী নিতে অস্বীকার করে বুঝিয়ে দিলেন শিল্পীদের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান দেওয়া তাঁদের অমর্যাদা করার প্রয়াসের যেন কার্যক্রম।আর এর বিরুদ্ধেই তাদের নীরব প্রতিবাদ।শিল্পীসত্বার সম্মানের ঘাটতি দেখে তাঁরা মার্জিত ও পরিশীলিত ভাবে সম্মানদাতাদের চেয়ে ভিন্ন লয়ে গান বেঁধেছেন।।
তাঁরা যৎকিঞ্চিত সরকারি সম্মানের কাঙাল নন।শিল্পীদ্বয় যে ভারত রত্ন, পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণের চেয়ে মর্যাদায় নিম্নতর চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মানের জন্য উন্মুখ নন তাও প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে সমগ্র ভারতবর্ষের সামনে তুলে ধরলেন। তাঁরা প্রকাশ করলেন- শিল্পীর কাছে আত্মসম্মান সবচেয়ে মূল্যবান।সঙ্গীত শিল্পীদের কাছে তাঁর ভক্তদের সম্মান গুরুত্বপূর্ণ, পদ্মশ্রী পুরস্কার নয় -জানিয়েছেন পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করা সঙ্গীত জগতের দুই ধারার দুই শিল্পী।
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় বা অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় সেই রাস্তাতেই হেঁটেছেন যে রাস্তায় একদা হেটেছিলেন সঙ্গীত জগতের আরও দুই নক্ষত্র হেমন্ত মুখোপাধ্যায় বা বিলায়েত খাঁ। তাঁরাও ফিরিয়ে দিয়েছিলেন পদ্মশ্রী।
অশক্ত শরীর যে মেরুদন্ডহীনতার তত্ব শোনায় না, যোগায় প্রতিবাদের ভাষা -তার নিদর্শন হয়ে থাকলেন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। শেষ মুহূর্তে ফোন তাও আবার পদ্মশ্রী – মানতে পারেন নি বাংলা চলচ্চিত্র জগতের সর্বকালের অন্যতম সেরা মহিলা কণ্ঠের শিল্পী। তিনি রাগপ্রধান গানের ধারার ও পথিক। মুনাওয়াজ আলী খানের কাছে তাঁর তালিম।যে কণ্ঠস্বর মানুষকে আবিষ্ট করে রেখেছে যুগে যুগে সেই কণ্ঠস্বর থেকে ব্যথা মিশ্রিত প্রতিবাদ ঝরে পড়ে। অসম্মানে আহত বোধ করেছেন কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।তাই পদ্মশ্রী সম্মান প্রত্যাখ্যানের সময় জানিয়ে দিলেন শিল্পীর কাছে তাঁর গানের শ্রোতারা সবচেয়ে বড় পুরস্কার।
পন্ডিত অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় তাঁর তবলায় সুরলহরী তুলেছেন নিরন্তর আর সঙ্গত করেছেন কখনও পন্ডিত রবিশংকরকে, কখনও বা হরিপ্রসাদ চৌরসিয়ার সঙ্গে। ২০১০ সালে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সামনে তবলায় বোল ফুটিয়েছিলেন। তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন তাঁর গুনমুগ্ধ শ্রোতা ছিলেন এপিজে আব্দুল কালাম।২২ বছর আগে পন্ডিত অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় সঙ্গীত একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন। সেই ইতিহাস সামনে রেখে তিনি বলছেন, পদ্মশ্রী পুরস্কার তার ক্ষেত্রে যথাযোগ্য নয়।
শিল্পীর সম্মান ভূলণ্ঠিত করার অভিযোগ আনা দুই মহান শিল্পী কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তকেকেই যেন করলেন কুঠারাঘাত। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় যেন শিল্পীদের মর্যাদা রক্ষার প্রতীক হয়ে উঠলেন।।
More Stories
মণিপুরে ধর্ষণ-খুনের ঘটনা : ময়নাতদন্তের রিপোর্টে অত্যাচারের প্রমাণ মিলল
উদ্ধব ঠাকরের পর এবার শিণ্ডের ব্যাগে তল্লাশি চালাল কমিশনের আধিকারিকরা!
বুলডোজার জাস্টিসের’ বিরুদ্ধে কড়া রায় শোনাল সুপ্রিম কোর্ট!