Home » মুখ্যমন্ত্রী বাংলার মানুষকে উৎসর্গ করলেন এই জয়, গৌতম দেব ছাড়া ঝুলে রইল বাকি তিন মেয়রের নাম

মুখ্যমন্ত্রী বাংলার মানুষকে উৎসর্গ করলেন এই জয়, গৌতম দেব ছাড়া ঝুলে রইল বাকি তিন মেয়রের নাম

সময় কলকাতা ডেস্কঃ  আজ চার পুরনিগম ভোটের ফল ঘোষণা হল। শিলিগুড়ি, আসানসোল চন্দননগর ও বিধাননগর পুরসভার। আসানসোলের আসন সংখ্যা ১০৬ টি, চন্দননগরের আসন সংখ্যা ৩৩ টি শিলিগুড়ির ৪৭ টি ও বিধাননগরের ৪১ টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গত ১২ তারিখ শনিবার। আর আজ সেই চার পুরনিগমের গণনাও শুরু হয় সকাল ৮ থেকে।কিন্তু ঘন্টা দুয়েকের মধ্যে পরিস্কার হয়ে যায় ফলাফলের গতি প্রকৃতি। তাতে দেখা যায় চতুর্দিকে ঘাস ফুলের জয়জয়কার। এবার বিধাননগর পুরনিগমের নির্বাচন ছিল তারকা নেতা নেত্রী প্রার্থীর ছড়াছড়ি। একদিকে ছিলেন সদ্য দল বদলু বিজেপি থেকে আসা তৃণমূলেরই প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত। তিনি জেতেন ৪৬৪৪  ভোটে। অন্যদিকে বিধাননগর পুরনিগমের প্রাক্তন চেয়ার পার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী। তিনি জেতেন ২১২০ ভোটে। জিতে আসার পর দুজনেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশির্বাদ পেতে রীতিমত প্রতিযোগিতায় নামেন। এখন দেখার সেই দৌড়ে কে জেতেন কে মেয়রের মসনদে বসেন।তবে ফলাফলের নিরিখে বিধাননগর পুরনিগমের ৪১ টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ৩৯ টি এবং কংগ্রেস ও নির্দলরা ১ টি করে আসনে জয়ী হয়। এই পুরনিগমের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী মমতা মণ্ডল ১১২০ ভোটে জয়ী হন। এখানে ৭ নম্বর ওয়ার্ডে  ৫৬৬৮ ভোটে তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের যুব নেতা দেবরাজ চক্রবর্তী জয়ী হন।

অন্যদিকে এবারের আসানসোল পুরনিগমের  ১০৬টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ৯১ টি, বিজেপি ৭ টি, বামেরা ২ টি আসন ও কংগ্রেস ৩ এবং নির্দলরা ৩ টি করে আসনে জয়ী হয়েছে। এদিকে আসানসোল পুরনিগমের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে  একই ভোট পেয়েছেন তৃণমূল ও বিজেপির প্রার্থী, সেক্ষেত্রে টস করে জয় পরাজয়ের নিষ্পত্তি হয়। এই  ওয়ার্ডে সিপিআইএম প্রার্থীর বিরুদ্ধে টসে জিতলেন তৃণমূল প্রার্থী। এদিক আসানসোলের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে বড়রকম সাফল্য পেল বিজেপি। এই ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির স্ত্রী চৈতালি তিওয়ারি। জয়ী হলেন তিনি ৩৩০০ টি ভোটে। যাতে উজ্জীবিত গেরুয়া শিবির। প্রসঙ্গত, ভোটের দিন যেভাবে হেনস্থার সম্মুখী ন হতে হয়েছিল চৈতালি তিওয়ারিকে। সে দিক থেকে বিচার করলে তাঁর এই জয় গেরুয়া শিবিরের একটি বড়সড় সাফল্য বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। পাশাপাশি আসানসোল পৌরনির্বাচনের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মুনমুন মুখার্জী জয়লাভের পর চলবোলপুর তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ের সামনে কর্মীসমর্থকেরা সবুজ আবির খেলায় মাতলেন!এবার দেখে নেওয়া যাক শিলিগুড়ি পুর নিগমের ফলাফল। শিলিগুড়িতে এই প্রথমবার তৃণমূল কংগ্রেস পুরবোর্ড দখল করল।  শিলিগুড়িতে ৪৭ টি আসনের মধ্যে ৩৭ টি আসনে তৃণমূল জয়ী হয়, ৫ টি আসনে বিজেপি, সিপিআইএম ৪ টি আসনে এবং ১ টি আসনে কংগ্রেস জয়ী হয়। এই পুরনিগমে হেরে গেলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা শিলিগুড়ি পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। ৫১০ ভোটে তিনি শিলিগুড়ির ৬ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী মহম্মদ আলম খানের কাছে হেরে যান। হারের পর শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বললেন মানুষ রাজনৈতিক ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে আমাদের।

এদিকে শিলিগুড়ি পুর নিগমের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে গৌতম দেব বড় ব্যবধানে জয়ী হন। গৌতম দেব শিলিগুড়ির মেয়র হবেন। কেননা তিনিই সেখানে সিনিয়র। জয়ের পর ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি জয়ের উচ্ছাসে তূনমূল কংগ্রেস নেতা গৌতম দেব খালি গলায় গানও গেয়ে ওঠেন ।

এবার চন্দননগরের পুরনিগমের আসন ছিল ৩১ টি। তাঁর মধ্যে ৩০ টি তৃণমূলের দখলে চলে যায়। একটি আসন বামেরা পেয়েছে। বিজেপি কংগ্রেস ধুয়েমুছে সাফ হয়ে যায়। এই পুরনিগমে ১৬ নম্বর  ওয়ার্ড থেকে একমাত্র সিপিআইএম প্রার্থী অভিজিৎ সেন  জয়ী হন ১২৩ ভোটে।
সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়  টুইট করে এই জয় বাংলার মানুষকে উৎসর্গ করেন  । লেখেন- আরও একবার মা-মাটি-মানুষের অভূতপূর্ব জয়। আসানসোল, বিধাননগর, শিলিগুড়ি, চন্দননগরের মানুষকে শুভেচ্ছা। এই পুরভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীদের উপর আস্থা রাখার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। এদিন গৌতম দেব ছাড়া  বাকি তিন পুরসভার মেয়র কে হবেন এই নিয়ে  প্রশ্ন করা হলে মুখ্যমন্ত্রী জানান তিনি উত্তরবঙ্গ সফরে যাচ্ছেন। সেখান থেকে ফেরার পরেই এব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিধাননগরে কৃষ্ণা চক্রবর্তীই ফের মেয়র হবেন কিনা, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনও উত্তর দেননি । তবে তিনি কৃষ্ণা চক্রবর্তী প্রশংসা করেন।

 

 

 

 

About Post Author