Home » কাটোয়া বইমেলা অবসান , মনকেমনের দিন

কাটোয়া বইমেলা অবসান , মনকেমনের দিন

সুজয় ভট্টাচার্য, ১৩ মার্চ  : “জীবন পাল্টায়। বইমেলা আমাদের জীবনের অঙ্গ, তাই সেটাও যে পাল্টাবে তা স্বাভাবিক! কিন্তু যা আজও পাল্টায়নি, তা হল বইমেলা ঘিরে আমাদের ভালবাসা,” লিখেছেন স্মরণজিৎ চক্রবর্তী। তাই বইমেলা শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও থেকে যায় মনকেমনের রেশ।  কাটোয়া বইমেলা তার ব্যতিক্রম হতে পারে না। শেষ হয়েও যেন রেশ কাটে না।

কাশীরাম দাস বিদ্যায়তন প্রাঙ্গনে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো সাত দিনব্যাপী ৩২ তম কাটোয়া বইমেলা ১১ মার্চ রাতে । ৫ মার্চ বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন পদ্মশ্রী পুরস্কার প্রাপক ধনীরাম টোটো তিনি  তিনি বিপন্নতার মুখে দাঁড়িয়ে থাকা টোটো জনজাতির মুখের ভাষা তথা সিনো-টিবেটিয়ান বা ইন্দো-বর্মান ভাষা পরিবারের টোটো ভাষার বর্ণ লিপি সৃষ্টি করে খ্যাতি অর্জন করেছেন। তিনি সাক্ষাৎকারে জানান বহু ধরনের মেলা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় হয় সেই তুলনায় বইমেলা হয় কম,এটি আমার কাছে বড় আক্ষেপ , ৩২ তম বইমেলায় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কাটোয়ার মহকুমা শাসক অর্চনা পি ওয়াঙ্খেড়ে , কাটোয়া মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কাশীনাথ মিস্ত্রি , মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক ভাষাবিদ সুস্মিতা মুখার্জি, পৌরপ্রধান সমীর কুমার সাহা ,বিশিষ্ট খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানী ডক্টরেট দেবব্রত মুখোপাধ্যায় ,চিকিৎসক গোবিন্দ রাম মান্না সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ । কলকাতার আনন্দ পাবলিশার্স, দেজ পাবলিশার্স সহ পঞ্চাশটির বেশি প্রকাশনা সংস্থা কাটোয়া  বইমেলায় বইয়ের পসরা সাজিয়েছিল। ভিড় হয়েছে বেশ ভালো কারণ বইয়ের টান। পাঠক পাঠিকারা তাঁদের পছন্দ মত বইয়ের খোঁজে ছুটে এসেছেন বইমেলায়। তাঁদের প্রাপ্তি যোগ হয়েছে পূর্ণ।

বইমেলা কমিটির সম্পাদক ডক্টরেট তুষার পণ্ডিত বইমেলার সাফল্যে নিজের ভালো লাগার কথা প্রকাশ করে জানান, এবার বইমেলায় আট থেকে আশি – সব বয়সের এবং সমাজের সমস্ত স্তরের মানুষ বইমেলা চত্বরে ভিড় জমিয়েছিল বইয়ের টানে।  বইমেলা কমিটির সদস্য দেবরাজ ঘোষ বলেন, ১৯৮৪ সালে কাটোয়া বইমেলা শুরু হয়েছিল।  কাটোয়া বইমেলা  ৩১ বছর পার করে এবার বত্রিশ তম বইমেলা আপন ছন্দে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পেরেছে বলে তিনি খুশি। এগিয়ে চলেছে সংস্কৃতির ধারক ও বাহক বইমেলা।

বই কেনা ও পড়ার পাশাপাশি,সাত দিনব্যাপী বইমেলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে কবিতা পাঠ বিজ্ঞান বিষয়ক আলোচনা সহ স্বাস্থ্য শিক্ষা বিষয়ে আলোচনা লোকগান । বইমেলার স্টলে হাজির ছিল সময় কলকাতা সহ একাধিক সংবাদ মাধ্যম।

আরও পড়ুন বইমেলা লিটল ম্যাগাজিনের অভিমুখ ও স্বপ্ন

সাতদিনের কাটোয়া বইমেলার সমাপ্তি হল হর্ষ-বিষাদে। আবার এক বছরের অপেক্ষা। পুজোর মত বইমেলা ঘুরে ঘুরে আসে। প্রতিটি বইমেলা ঘিরে জমে ওঠে স্মৃতি। বইমেলার স্মরণ তাই মনকেমনের দিন। এবারের কাটোয়া বইমেলা পাঠককে ভরিয়ে দিয়েছে সংস্কৃতির সৌরভে। বইয়ের প্রতি তীব্র ভালোবাসা আর ৩২ তম কাটোয়া বইমেলা মিলেমিশে থেকে যাবে পাঠকের স্মৃতিতে অম্লান।।

About Post Author