সময় কলকাতা ডেস্ক, ৪ জুনঃ বাংলাদেশের ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম খুনের ঘটনায় তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই যেন ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য। তদন্তে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে আজিমের বন্ধু তথা বাংলাদেশের ব্যবসায়ী আখতারুজ্জামান শাহিনের নাম উঠে আসছে। তদন্তকারী আধিকারিকরা জানিয়েছেন, আনোয়ারুল আজিমকে খুন করার পর পরই মূল অভিযুক্ত আখতারুজ্জামান শাহিন এবং শাহিনের ঘনিষ্ট বলে পরিচিত সিয়াম নেপালে পালিয়ে যায়। ইতিমধ্যেই নেপালে সিয়ামকে আটক করা হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। সিয়ামকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে নেপালে গিয়েছে ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। এমনকী সিয়াম হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালত। জানা গিয়েছে, সিয়ামের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার জন্য আবেদন করেন ডিবির সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান।
ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে, আনোয়ারুল আজিমকে খুনের জন্য বাংলাদেশের কুখ্যা্ত সুপারি কিলার আমানুল্লাহকে পাঁচ কোটি সুপারি দেয় শাহিন। সে টোপ হিসাবে ব্যমবহার করে নিজেরই সুন্দরী বান্ধবী শিলাস্তি রহমানকে। এরপর ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূল চক্রীরাই আজিমকে নিউ টাউনের ফ্ল্যানটে নিয়ে আসে। তদন্তে নেমে জানা গিয়েছে, গত ১৩ মে বিকেল চারটে নাগাদ শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় সাংসদ আজিমকে। এরপর শাহিনের নির্দেশেই সাংসদের দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে ফ্রিজে রেখে দেওয়া হয়। খুনের পর দেহাংশের পচন ও দুর্গন্ধ ঠেকাতে ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করা হয়। খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই জিহাদ হাওলাদার (২৪) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। এই জিহাদই সাংসদকে খুনের পর টুকরো টুকরো করেছিল। সূত্রের খবর, আখতারুজ্জামান দু’মাস আগেই জিহাদকে কলকাতায় নিয়ে এসেছিল। জিহাদ জেরায় স্বীকারও করেছে, সে ও আরও চারজন বাংলাদেশি নাগরিক মিলে সাংসদকে নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে খুন করে।
উল্লেখ্য, চিকিৎসার জন্য গত ১২ মে কলকাতায় এসেছিলেন বাংলাদেশের ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম। কলকাতায় স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ দেখাতে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু, কলকাতায় আসার পর ১৮ মে থেকে তিনি নিরুদ্দেশ ছিলেন। অবশেষে মঙ্গলবার নিউটাউনের অভিজাত আবাসন থেকে উদ্ধার হয় বাংলাদেশের সাংসদের দেহ। সূত্রের খবর, গত আট দিন ধরে তাঁর কোনও খোঁজ মিলছিল না। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১২ মে কলকাতায় এসেছিলেন আজিম। একজন অফিসারের ফ্ল্যাটে উঠেছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন আরও তিন জন। বরানগর এলাকার সিঁথিতে যে বন্ধুর বাড়িতে উঠেছিলেন আজিম, তাঁর নাম গোপাল বিশ্বাস। গত ১৩ মে তাঁর বাড়ি থেকে বেরিয়ে ভাড়া করা গাড়িতে উঠেছিলেন আজিম। দুপুরে বেরিয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকে তাঁর আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। ১৩ মে-র পর ওই সাংসদের পরিবার তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেনি। সাংসদের মেয়ে বাংলাদেশের থানায় অভিযোগ দায়ের করেন, তারপরই শুরু হয় তদন্ত। গোপাল বিশ্বাস ১৮ মে বরানগর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। সেই সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। বাংলাদেশের গোয়েন্দা বিভাগও তদন্ত শুরু করে। পরে বিষয়টি নিয়ে ভারতের সঙ্গেও যোগাযোগ করে তারা।
More Stories
দুর্নীতি থেকে সরাসরি সুবিধে পেয়েছেন যাঁরা, এ বার তাঁরাও তদন্তে আতস কাচের নিচে
নতুন রাজ্য সভাপতি নির্বাচন নিয়ে মেগা বৈঠকে বঙ্গ বিজেপি
তৃণমূলের জেলা-ব্লক প্রেসিডেন্ট বদল এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা, সংগঠনের রাস অভিষেকের হাতে