Home » গুরু না ভজিলে…! ভারতের বিতর্কিত ধর্মগুরুদের কীর্তি!

গুরু না ভজিলে…! ভারতের বিতর্কিত ধর্মগুরুদের কীর্তি!

সময় কলকাতা ডেস্ক, ৩ জুলাই : গুরু না ভজিলে সন্ধ্যা সকালে, মনপ্রাণ দিয়া….. গুরুর ছড়াছড়ি দেবতীর্থ ভারতে। গত কয়েকদশকে দেশে অসংখ্য ধর্মগুরুর আবির্ভাব ঘটেছে এদেশের বিভিন্ন প্রান্তে । ধর্ম প্রচারের ফাঁকে বাবারা দুস্কর্ম ও ব্যভিচারের পাহাড়ে বসলেও সমস্ত অভিযোগ ধামাচাপা পড়ে যেত। তবুও পাপ চিরদিন চাপা থাকে নি। বিতর্কিত গুণধর ধর্মগুরুদের কীর্তির যে শেষ নেই!

গুণধর ধর্মগুরুদের অনেকের দুষ্কর্ম প্রকাশ পেয়েছে যুগে যুগে। অনেকেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ও খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন । এই ধর্মীয় নেতাদের মধ্যে সাম্প্রতিক বিতর্কের ইন্ধন জুগিয়েছেন নারায়ণ সাকার বা বিশ্বহরি ভোলে বাবা।  ভোলে বাবা যে পথে এসেছেন অর্থাৎ ঈশ্বরের প্রতিভু হয়ে সে পথে আলোড়ন ফেলেছিলেন আশারাম বাপু, বাবা রামরহিম, নিত্যানন্দ স্বামী, প্রেমানন্দ প্রমুখ।  মুখে মানবপ্রেম ও দেবতার মাহাত্ম্য প্রচারের কথা বললেও বিতর্কিত ধর্মগুরুদের বিরুদ্ধে উঠে এসেছে একাধিক ভয়ঙ্কর অভিযোগ। নারীঘটিত দুষ্কর্মের  অভিযোগের শিরোমণি হয়ে উঠেছেন বেশ কিছু ধর্মগুরু।

বাবা রামরহিম : বাবা রামরহিম একদা তোলপাড় ফেলে দিয়েছিলেন। ধর্মগুরু ধর্মপ্রচার করে এক বিশাল সাম্রাজ্যের অধীশ্বর হয়ে উঠেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল ধর্ষণের। গুরুমিত রাম রহিম সিং শিরসা ডেরায় ভক্ত নারীদের নিয়ে তাঁর লালসা এবং কামনা-বাসনা চরিতার্থ করতেন। আশ্রম হয়ে উঠেছিল যৌন আখড়া।

আরও পড়ুন Hathras stampede ভোলেবাবা হাওয়া : হাতরাসে শতাধিক ভক্তের মৃত্যুর কারণ কী ?

আশারাম বাপু : আশারাম বাপুর নামডাক কম ছিল না কিন্তু তাঁর আশ্রমের গুরু বলে দুটি নাবালকের মৃত্যু হওয়ার পরে নজর পড়ে তাঁর কাজ- কারবারের দিকে। তদন্ত শুরু হতেই অসংখ্য দেহ আবিষ্কৃত হয় তাঁর আশ্রম থেকে। খুন ও ধর্ষণের অজস্র তথ্য সম্বলিত অভিযোগ আসতে থাকে সামনে।

প্রেমানন্দ  : তামিলনাড়ুর  প্রেমানন্দ তিরুচিরাপল্লীর আশ্রম থেকে  ধর্ম প্রচার করতেন। ১৩ জন মহিলাকে  ধর্ষণের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে প্রমাণিত হয়েছিল। এছাড়াও শ্রীলঙ্কার এক নাগরিককে খুন করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।

নিত্যানন্দ স্বামী : সুনামের সঙ্গেই ধর্ম প্রচার করে চলেছিলেন নিত্যানন্দ স্বামী। যেই না রনজিতার সঙ্গে তাঁর অভিসার ও গোপন যৌনকর্মের  ভিডিও ফুটেজ সংবাদ মাধ্যমের সুবাদে প্রকাশ পেল তারপরে একএক বেরিয়ে আসতে থাকল তাঁর কীর্তি।

স্বামী সদাচারী : রাজনৈতিক নেতা  ও মন্ত্রীদের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে ধর্মগুরুরা  কোন স্তরে দুর্নীতি ও ব্যভিচারে যুক্ত হতেন তার প্রমাণ স্বামী সদাচারী। প্রধানমন্ত্রীর বাসগৃহে  যাগযজ্ঞ  করতেন তিনি ছিলেন আবার  অজস্র কুকর্মের পান্ডা।  তিনি চালাতেন যৌনপল্লী যেখানে অসংখ্য নাবালিকাকে জোর করে নিয়ে আসা হত।

জ্ঞানচৈতন্য :  জ্ঞানচৈতন্য ছিলেন খ্যাতিসম্পন্ন ধর্মগুরু। আমন্দা উইলিয়ামস,এক বিদেশিনী দাবি করেছিলেন তাঁর স্বামী পুনর্জন্ম নিয়ে ভারতে  ধর্মগুরু হিসেবে দেখা দিয়েছেন। জ্ঞানচৈতন্যর  ভক্তের সংখ্যা ছিল অগণন।গুণধর বাবা ধর্ম প্রচারের ফাঁকে  খুন ও ব্যাভিচারের পাহাড়ে বসে ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে তিনটি খুন আইনের চোখে প্রমাণিত হয় যার ফলে ১৪ বছর জেল খাটতে হয় তাকে।

ভোলে বাবা : ছিলেন পুলিশের কনস্টেবল, হয়ে গেলেন লাখ লাখ ভক্তের বাবা।  সুরজপাল সিং পুলিশের চাকরি ছাড়লেও  অপরাধ জগতের সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন ৯০ এর দশক থেকে এমনটাই অভিযোগ। গত শতকের শেষভাগে  তার বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ ওঠে, জেলও খাটতে হয়  সুরজ পাল সিং কে। জেল থেকে বেরিয়ে স্বঘোষিত  গডম্যান বা ধর্মগুরু আশ্রম গড়ে তোলেন। ভক্ত সংখ্যা দিনে দিনে বাড়তে থাকে তার। ধর্ম প্রচারের ফাঁকে নিজের খ্যাতিকে কাজে লাগিয়ে দুষ্কর্মের পাহাড় গড়ে তোলেন তিনি। এটাওয়া, আগ্রা সহ একাধিক থানায় তার বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের  অভিযোগসহ একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে। আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে করোনাকালে একত্রে  ৫০ জনের বেশি উপস্থিতির আইনের তোয়াক্কা করেননি তিনি।একাধিক ধর্ম সভার আয়োজন করেন ভোলে বাবা  যেখানে হাজার হাজার ভক্ত সমাগম ঘটে। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ৮০ হাজার লোকের  সমাবেশের অনুমতি নিয়ে যে ধর্ম অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন তিনি সেখানে আড়াই লক্ষ লোকের সমাগম হয়। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় শতাধিক মানুষের।।

About Post Author