Home » প্রাক্তন পুলিশ কনস্টেবল নাকি জেলখাটা আসামী? কে এই ভোলেবাবা? প্রকৃত পরিচয় কী হাতরাসের বিশ্বহরির?

প্রাক্তন পুলিশ কনস্টেবল নাকি জেলখাটা আসামী? কে এই ভোলেবাবা? প্রকৃত পরিচয় কী হাতরাসের বিশ্বহরির?

সময় কলকাতা ডেস্ক, ৩ জুলাই : Hathras stampede  কথায় আছে,”সৎসঙ্গে স্বর্গবাস  অসৎসঙ্গে নরকবাস। ” কথায় আছে ভোলে বাবা পার করেগা।ভোলে বাবা পার করেন নি! সৎসঙ্গে ১২২ জন মানুষের ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে, তারা স্বর্গে না নরকে গিয়েছে  সে আলোচনার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে কে এই স্বঘোষিত গডম্যান বা ধর্মগুরু ভোলে বাবা? এই ভোলেবাবা বিশ্বহরি নারায়ণ সাকারের পরিচয় কী?

জানা গিয়েছে নারায়ণ সাকারের প্রকৃত নাম সুরজ পাল সিং। তিনি কাসগঞ্জের বাহাদুর নগরের বাসিন্দা। একটি দলিত পরিবারে জন্ম তার। তিনি একদা উত্তরপ্রদেশ পুলিশের কনস্টেবলের পদে চাকরি করতেন। পরিচিত মহলে নিজেকে গোয়েন্দা বলতেন তিনি।বছর দশেক কনস্টেবল চাকরি করার পরে  দুই যুগের বেশি সময় আগে চাকরি ছেড়ে দেন ভোলে বাবা নাম গ্রহণ করেন তার স্ত্রী মাতাশ্রী নামে পরিচিত ছিলেন। ভোলে বাবা – মাতাশ্রীর সন্তান ছিল না, তাদের সন্তান  লক্ষাধিক ভক্ত।

পুলিশের চাকরি ছাড়ার পরে তিনি ধর্ম প্রচারক হয়ে ওঠেন। সনাতন ধর্মের মানুষ হলেও এক নতুন ধারায় তিনি ধর্মের কথা বলতেন। তাঁর ভক্তরা বলত, ভোলে বাবা বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন । ভোলে বাবার ঈশ্বর দর্শন ছিল স্বতন্ত্র যার ফলে ধর্মের নতুন সংজ্ঞা তিনি দিতে শুরু করেন।

অথচ জানা গিয়েছে ভোলেবাবার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ দায়ের হয়েছিল ১৯৯৭ সালে। ৫৮ বছর বয়সী সুরজপালের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল যার ফলে জেলেও যেতে হয় তাঁকে। জেল থেকে মুক্তি পেয়ে সাকার বিশ্বহরি বাবা নামে ভক্তদের আশীর্বাদ বর্ষণ করে ধর্মীয় মাহাত্ম্য প্রচার করতে থাকেন সুরজপাল। তবুও একাধিক অভিযোগ সৎসঙ্গ ও ভোলেবাবার বিরুদ্ধে আগ্রা,ফারুকাবাদ,এটাওয়াতে দায়ের হয়। এই অভিযোগের মধ্যে যৌন নিগ্রহের অভিযোগও ছিল।

পুলিশ বাহাদুর নগর গ্রামে তার খোঁজে যায়, গ্রামের প্রধান নার্গিস খানমের স্বামী জাফর আলি জানিয়েছেন, সুরজ পাল সিংদের পরিবারের অবস্থা ছিল আর্থিক ভাবে সচ্ছল। গ্রামে ৩০ বিঘা জমির উপরে একটি আশ্রম বানিয়েছিলেন ভোলেবাবা, দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা আসত। প্রায় পাঁচ বছর আগে তিনি গ্রাম ছেড়ে চলে যান এবং শোনা যেত তিনি রাজস্থানে আছেন। গত বছর গ্রামে ফিরে একটি ট্রাস্টি বোর্ডের হতে সম্পত্তি তুলে দিয়েছিলেন ভোলে বাবা। ম্যানেজার  সবকিছু দেখতেন।

তদন্ত চলছে। এফআইআর হয়েছে। এফআইআরে বলা হয়েছে অতিরিক্ত লোক জমায়েত হয়েছিল। ধর্ম সম্মেলনে প্রকৃত লোকসংখ্যার তথ্য চেপে রাখা হয়েছিল। ৮০, ০০০ লোকের অনুমতি নেওয়া হলেও আড়াই লাখের বেশি মানুষ  এসেছিল। কোভিডের সময় ফারুকাবাদে এরকম এক সভায় ৫০ জনের জায়গায় ৫০, ০০০ লোক জমায়েত করে অনুষ্ঠান করেছিলেন ভোলেবাবা।

বিভিন্ন অভিযোগ ভোলেবাবার অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে উঠে আসলেও ভোলে বাবার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ সরকারি স্তরে নথিভুক্ত  হয়নি। আর ভক্তরাও ভোলেবাবা কে এতবড়ো ঘটনার পরে বিন্দুমাত্র দোষারোপ করছেন না।

বিনোদ হারিয়েছেন মা, স্ত্রী, কন্যাকে। তিনি বলছেন তাদের যেতে তিনি বারণ করেছিলেন। কেন যে গেল ওরা? ভোলে বাবাকে নিয়ে খুব নেই তার মুখে ক্ষোভ নেই তার মুখে। বাড়ির লোকের সৎ সঙ্গে যাওয়া নিয়ে তার ক্ষোভ। কর্পূরী চাঁদ ধর্মসভায় হাজির ছিলেন। তিনি বলছেন, ভোলেবাবার কোন দোষ নেই।  যাদের দোষ তাদের শাস্তি হোক। আর তাই ভোলে বাবার বিরুদ্ধে এফআইআর হয় না। এফ আই আরে নারায়ণ সাকার বা সুরজ পাল সিংয়ের বিরুদ্ধে নাম থাকে নি, নাম থাকে অনুষ্ঠানের ভোলে বাবার ঘনিষ্ঠ মূল মুখিয়া বা মুখ্য সর্দারের নাম। কর্পূরে মত উবে গেলেও স্বঘোষিত ঈশ্বরপ্রেরিত ধর্মগুরুর সন্ধানে খোঁজ সেভাবে হয় না। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ কোথায়?

About Post Author