সময় কলকাতা ডেস্ক, ৯ জুলাইঃ নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই যেন ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য। মানিক ভট্টাচার্যের পরামর্শে ওএমআর শিট নষ্ট করা হয়েছে। প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার হাইকোর্টে এমনটাই বিস্ফোরক দাবি করল পর্ষদ। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতির বিরুদ্ধে এহেন অভিযোগ শুনে রীতিমতো চমকে গিয়েছেন বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা। মঙ্গলবার ছিল ২০১৭ সালে প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি। এদিন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ওএমআর সিট নষ্ট করা হয়েছে। সম্পূর্ন বেআইনি হওয়া সত্ত্বেও মানিক ভট্টাচার্যের অনুমোদনেই ওএমআর শিট নষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। পর্ষদের সদস্যদের সঙ্গে কোনো পরমার্শ ছাড়াই সবকিছু হয়েছে। কিন্তু, পর্ষদের বোর্ডের সদস্যরা এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। ইতিমধ্যেই বোর্ডের সদস্যদের সেই সময়কার ‘রিজলিউশন’ পেপার আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার। যদিও পর্ষদের বক্তব্য, মানিক ভট্টাচার্য নিজে বোর্ডের সিদ্ধান্ত নিতেন। তিনি বোর্ডের অন্যান্য সদস্যদের জানাননি। ওএমআর শিটের বিষয়ে বোর্ডের মিটিংয়ে কোনও ‘রেজলিউশন’ নেওয়া হয়নি। যা শুনে বিস্মিত হন বিচারপতি রাজা শেখর মন্থর। আগামী শুক্রবার মামলার পরবর্তী শুনানিতে মিটিংয়ের ‘রিজলিউশন’ কপি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন সন্দেশখালি মামলায় রাজ্যের আর্জি খারিজ সুপ্রিম কোর্টের, সিবিআই-ই তদন্ত করবে সন্দেশখালিতে
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে প্রাথমিক শিক্ষা পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করেছিলেন ইডি। দীর্ঘদিন জেলবন্দি থাকার পর এর আগেও জামিনের আরজি নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মানিক। তবে, এই তদন্ত শেষ করার জন্য ডিসেম্বরের মধ্যে সময় বেঁধে দিয়েছিল আদালত। কেননা বিচারাধীন অবস্থায় জামিন মঞ্জুর হলে তার প্রভাব তদন্তের ওপর পড়তে পারে বলেই মনে করছে আদালত। কার্যত সেই কারণেই এদিন মানিক ভট্টাচার্যের জামিন মামলার শুনানি পিছিয়ে যায়। প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০২২ সালের ১১ অক্টোবর মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করেছিল তদন্তকারী সংস্থা। এরপরই তদন্তে নেমে মানিকের বিপুল সম্পত্তির হদিশ পান ইডি। এরপরই নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়ায় মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্য এবং ছেলে শৌভিক ভট্টাচার্যের। এরপর ২০২৩-এর ২২ ফেব্রুয়ারি ব্যাঙ্কশাল আদালতে আত্মসমপর্ণও করেন মানিকের স্ত্রী ও পুত্র।
জানা গিয়েছে, ২০১২ সাল থেকে ২০বার বিদেশ সফরে গিয়েছে মানিক ভট্টাচার্যের পরিবার। বিদেশ সফরের তালিকায় ফ্রান্স, নাইজেরিয়া, মালদ্বীপ, ব্রিটেন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনামের মতো একাধিক দেশ রয়েছে। প্রতিটি সফরে খরচ হয়েছে কমপক্ষে ৪০ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা। অন্যদিকে, মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রীর বিরুদ্ধেও একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ আনা হয়েছিল ইডি-র তরফে। তদন্তকারী আধিকারিকদের দাবি, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গেই জড়িত ছিলেন তাঁর স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্য। নিয়োগ দুর্নীতির একাধিক তথ্য মানিকের স্ত্রীর কাছে রয়েছে।
#Latestbengalinews
#মানিকভট্টাচার্য
#নিয়োগদুর্নীতিমামলা
#ওএমআরশিট
#ManikBhattacharya
#OMRsheets
#PrimaryEducationBoard
More Stories
অনশন প্রত্যাহার চাকরিহারাদের, মঞ্চ থেকেই নতুন হুঁশিয়ারি!
রাজ্যে কবে হবে ছাত্র সংসদের নির্বাচন, জানালেন শিক্ষা মন্ত্রী
প্রাথমিক স্কুলের পাশেই পরিত্যক্ত ও আগাছায় ভরা কুয়ো! ভয়ে একা বেরোয় না শিশুরা