Home » তৃণমূলের ‘এসআইআর’ ইস্যু, বিজেপির ‘নাগরিকত্ব আশ্বাস’! দিল্লির বৈঠকে নয়া কৌশল তৈরি শাহ-শমীকের

তৃণমূলের ‘এসআইআর’ ইস্যু, বিজেপির ‘নাগরিকত্ব আশ্বাস’! দিল্লির বৈঠকে নয়া কৌশল তৈরি শাহ-শমীকের

সময় কলকাতা ডেস্ক:- তৃণমূল যেভাবে বাংলায় ভোটার তালিকার বিশেষ ও নিবিড় পরিমার্জন-সহ বাঙালি অস্মিতায় শান দিচ্ছে, সোমবারের বৈঠকে তারই পাল্টা রণকৌশল তৈরির নির্দেশ দেন অমিত শাহ। সোমবার বাংলার নেতৃত্বের সঙ্গে ঘণ্টা দেড়েকের বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। উপস্থিত ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বিএল সন্তোষ, বাংলার কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনশল, মঙ্গল পাণ্ডে, সতীশ ধুন্দ, আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য, রাজ্য বিজেপির সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার ও রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী। প্রায় দেড় ঘণ্টার বৈঠকে বাংলায় দলের ভবিষ্যৎ রণনীতি স্পষ্ট করেন শাহ।

কী কী নির্দেশ শাহের?

ছাব্বিশে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে বঙ্গ বিজেপির জন্য একেবারে কৌশল এঁটে দেন শাহ। পাশাপাশি দেন জেলা ভিত্তিক সংগঠন মজবুত করার বার্তাও। সোমে আয়োজিত দিল্লির বৈঠকে তৃণমূলের বাঙালির অস্মিতা নিয়ে বঙ্গ বিজেপিকে সতর্ক করেছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, বিজেপি যে বাংলা বিরোধী নয়, সেটা প্রতি মুহূর্তের প্রচারে তুলে ধরতে হবে।

বাঙালি পরিচয় ও ‘বহিরাগত’ তত্ত্বে সতর্ক বার্তা বিজেপিকে

বৈঠকে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তৃণমূল বাঙালি অস্মিতাকে সামনে রেখে যে ভোট প্রচার শুরু করেছে, তার মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে। বিশেষ করে ‘বহিরাগত’ ইস্যুতে যাতে বিজেপি বিপাকে না পড়ে, সেই বিষয়ে কড়া সতর্কতা দেন শাহ। বাংলার সংস্কৃতি, ভাষা ও আবেগকে সম্মান জানিয়েই প্রচারে যেতে হবে বলে বার্তা দেওয়া হয়। যে সুযোগ তৃণমূল একুশের নির্বাচনে পেয়েছিল, সেই ‘বহিরাগত‘ তত্ত্ব পুনরায় ফিরে না আসে বলেই বঙ্গ বিজেপিকে সর্তক করেছে শীর্ষ নেতৃত্ব। এমনকী, তৃণমূল কোনও ন্যারেটিভ তৈরির চেষ্টা করলে পাল্টা জবাব দিতে হবে বলেই বার্তা ‘শাহি বৈঠকে’।

সংগঠনের দুর্বলতা নিয়ে অসন্তুষ্ট শাহ

বিজেপির দিল্লির আলোচনায় উঠে আসে রাজ্য স্তরের কমিটির কথাও। লোকসভা নির্বাচনে অল্প ভোটে হারা এলাকায় বুথ কমিটি গঠন প্রক্রিয়া কোথায় আটকে, কেন আটকে? সেই বিষয়ের নজরের পরামর্শ শাহের। দ্রুত কমিটি গঠনেও দিয়েছেন জোর।

সিএএ ও নাগরিকত্ব ইস্যুতে জোরালো প্রচার চালানোর নির্দেশ

একদিকে যেমন তৃণমূলের ‘এসআইআর-ভয়’। সেই সময় বঙ্গ বিজেপির হাতে রয়েছে ‘সিএএ-জোর’। আর সোমের বৈঠকের অভিমুখ ছুঁয়ে যায় সেই দিকটাও। সিএএ-কে কেন্দ্র করে যে ক্যাম্প তৈরি হচ্ছে, তাতে গাফিলতি না রাখার বার্তা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। সম্প্রতি, এই সিএএ হেল্পডেস্কে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের আহ্বান দিতে শোনা গিয়েছিল শান্তনু ঠাকুরকেও। তবে পাল্টা আন্দোলনের রূপরেখা এতে সিএএ-বহিরাগত ইস্যুতেই থেমে থাকছে না। দিল্লির বৈঠকের পরেই কোন পথে আন্দোলন হবে সেই নিয়ে দিনের দিন জেলা স্তরে বার্তা পৌঁছে দেওয়া নির্দেশ দেন শাহ, নির্দেশ দেন বৈঠক করারও। সেই সূত্র ধরেই সোমবার রাত ৯টাতেই কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেন বাংলার নেতারা। পাশাপাশি, বৈঠক করা হয়েছে জেলা সভাপতিদের সঙ্গেও।

তিরঙ্গা যাত্রার ডাক বিজেপির পাল্টা কর্মসূচি

এই বৈঠকেই রাজ্য জুড়ে তিরঙ্গা যাত্রা করার ডাক দিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বরা। একদিকে তৃণমূল যখন SIR ইস্যুতে সুর চড়াবে, সেই সময় তিরঙ্গা যাত্রা কর্মসূচিকেও হাতিয়ার করবে বাংলার বিজেপি।

পাল্টা প্রচারে ঝাঁপাতে চলেছে বিজেপি

একদিকে তৃণমূল যেখানে বাংলার ভোটার তালিকা সংশোধন ও ভাষাগত আবেগে শান দিচ্ছে, সেখানে বিজেপি নাগরিকত্ব ইস্যুকে সামনে রেখে বাংলার রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ ঘটাতে চায়। সবমিলিয়ে, ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের অনেক আগেই বাংলার মাটি ঘিরে শুরু হয়ে গিয়েছে প্রচারের জোরদার যুদ্ধ।

About Post Author