সময় কলকাতা ডেস্ক:- মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে বৈঠক হল, তবে সেই আলোচনাতে মিলল না সমাধান। তিনঘন্টা ধরে কথোপকথনের পরও ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কোনও নির্দিষ্ট চুক্তি বা যুদ্ধবিরতির ঘোষণা হয়নি। বৈঠকের শেষে দুই নেতাই কিছুটা অগ্রগতির দাবি করলেও সেভাবে কোনও সুনির্দিষ্ট সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসেনি।
এই পরিস্থিতিতে ভারতের জন্য বাড়ছে অনিশ্চয়তা। কারণ, রাশিয়ার তেলের উপর নির্ভরশীলতার জন্য ইতিমধ্যেই আমেরিকার শুল্কের আঘাতের মুখে দাঁড়িয়ে দিল্লি। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর থেকে পশ্চিমা দুনিয়ায় কার্যত একঘরে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। সেই অবস্থায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে এই বৈঠক ক্রেমলিনের কাছে বড় কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবেই ধরা হচ্ছে। বৈঠক শেষে প্রেস কনফারেন্সে ট্রাম্প বলেন, দুই দেশ কিছুটা এগিয়েছে তবে কোনও ডিল বা চুক্তি হয়নি।
এদিকে, পুতিন বলেন, আলোচনায় কিছু ইতিবাচক দিক খুঁজে পাওয়া গিয়েছে এবং তিনি আশা করছেন আমেরিকার ইউরোপীয় মিত্ররা এই অগ্রগতিতে বাধা দেবে না। পুতিন মার্কিন প্রেসিডেন্টের কথায় সায় দিয়েও খানিক শর্ত জুড়ে দিয়ে বলেন, কিছু ভুল স্বীকার করতে হবে।
তিনি বলতে চেয়েছেন, যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরির জন্য ইউক্রেন প্রেসিডেন্টকে ক্ষমা চাইতে হবে।
জবাবে ট্রাম্প জানান, তিনি এই বিষয়ে জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলবেন। তাঁর কথায় যুদ্ধ বন্ধ এখন অনেকটাই নির্ভর করছে ইউক্রেন ও তার মিত্রদের উপর। বলেন, এই কারণেই বৈঠকে আমেরিকা-রাশিয়া চূড়ান্ত সাফল্যের দিকে এগতে পারল না। তবে অনেকটাই অগ্রগতি হল।
তবে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন— এই বৈঠকে ইউক্রেনের কোনও প্রতিনিধি ছিলেন না। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, রাশিয়াকে কোনও ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্নই নেই।
তিনি লিখেছেন, ইটস টাইম টু এন্ড দ্য ওয়ার… ইউক্রেন আমেরিকার উপর ভরসা করছে। যদিও, ট্রাম্প পরে এক সংবাদমাধ্যমকে জানান, বৈঠকে সম্ভাব্য জমি বদল ও নিরাপত্তা গ্যারান্টির মতো বিষয় আলোচনায় উঠেছে।
তাঁর দাবি, মিমাংসার অনেকটাই কাছাকাছি পৌঁছনো গিয়েছে। এখন ইউক্রেনের সম্মতি দরকার।
তবে পুতিন নিজের অবস্থানেই অনড়—রাশিয়ার মতে, যুদ্ধের মূল কারণগুলো মেটানো ছাড়া শান্তি সম্ভব নয়। এদিকে, বৈঠক চলাকালীনই ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বিমান হামলার সাইরেন বাজে। রাশিয়া দাবি করেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এক রাতে ২৯টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করেছে। এই পরিস্থিতি দেখে এটা কার্যত স্পষ্ট যে বৈঠকের কোনও চুক্তি না হলেও যুদ্ধ থামেনি। বরং সংঘাত বাড়ছে।
তবে ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়া-আমেরিকার বৈঠক ব্যর্থ হতেই স্বাভাবিকভাবেই সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে ভারত। ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকেই ভারত বড় আকারে সস্তা রাশিয়ান অপরিশোধিত তেল কিনছে। কিন্তু এর ফলে আমেরিকার অসন্তোষ ক্রমশ বাড়ছে।
ট্রাম্প প্রশাসন স্পষ্ট করে দিয়েছে, রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ না করলে ভারতের রফতানির উপর অতিরিক্ত ২৫% শুল্ক চাপানো হবে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে আরও ২৫% জরিমানা—ফলে কার্যত মোট ৫০% শুল্ক। ভারত চায় অন্তত এই সিদ্ধান্ত স্থগিত থাকুক, কারণ ২৭ আগস্ট থেকে নতুন শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা।
More Stories
বিদায় আসরানি, চলে গেলেন কিংবদন্তি কৌতুক-অভিনেতা
জম্মু-কাশ্মীরে নাশকতার ছক ভেস্তে দিল সেনা, গুলির লড়াইয়ে শহিদ এক জওয়ান
ট্রাম্প প্রসঙ্গে কেন্দ্রকে ব্যঙ্গ রাহুল গান্ধির, ভিসা নীতি নিয়ে প্রচ্ছন্ন বার্তা মোদির