সময় কলকাতা ডেস্ক:- আমেরিকা-রাশিয়া, দু-তরফই বৈঠকটিকে আগাম ঐতিহাসিক দাবি করেছিল। টানা তিন ঘণ্টা আলোচনা। দু’পক্ষই বৈঠক শেষে দাবি করে, আলোচনা অনেকটাই সফল।
তবে জানা গেল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দীর্ঘ বৈঠক শেষেও রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের জট কাটল না। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট বৈঠককে ‘অত্যন্ত ফলপ্রসূ’ বলে দাবি করেছেন। ফের বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৈঠক শেষে জানিয়েছেন, ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ থামাতে আরও আলোচনা দরকার। তাই অল্পদিনের মধ্যেই তাঁরা ফের বৈঠকে বসবেন। সেই বৈঠক হতে পারে মস্কোয়।
ভারতীয় সময় শুক্রবার ভোররাতে শেষ হয় ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক। বহু আলোচিত বৈঠকটি হয় যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের অ্যাঙ্কোরেজ শহরে। সেখানেই রয়েছে আমেরিকার এলমেনডর্ফ-রিচার্ডসন সামরিক ঘাঁটি। শুক্রবার রাতে সেখানে বৈঠক শুরুর আগে মার্কিন ও রুশ প্রেসিডেন্টকে অত্যন্ত আন্তরিক, ইতিবাচক দেখাচ্ছিল। হ্যান্ডশেক করেন অনেকটা সময় ধরে।
তারপর তিন ঘণ্টার বৈঠক শুরু হয়। প্রথমে প্রতিনিধি পর্যায়ে। তারপর একান্তে। আলোচনা শেষে দুই রাষ্ট্রপ্রধান যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করেন।
ট্রাম্প বলেন, আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। বাকিটা হবে ন্যাটো গোষ্ঠীভুক্ত এবং ইউরোপিয় দেশগুলির সঙ্গে আলোচনার পর। তাদের রাজি করানোর কাজটা তিনি চালিয়ে যাবেন।
এদিকে, পুতিন মার্কিন প্রেসিডেন্টের কথায় সায় দিয়েও খানিক শর্ত জুড়ে দিয়ে বলেন, কিছু ভুল স্বীকার করতে হবে। তিনি বলতে চেয়েছেন, যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরির জন্য ইউক্রেন প্রেসিডেন্টকে ক্ষমা চাইতে হবে।
জবাবে ট্রাম্প জানান, তিনি এই বিষয়ে জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলবেন। তাঁর কথায় যুদ্ধ বন্ধ এখন অনেকটাই নির্ভর করছে ইউক্রেন ও তার মিত্রদের উপর। বলেন, এই কারণেই বৈঠকে আমেরিকা-রাশিয়া চূড়ান্ত সাফল্যের দিকে এগতে পারল না। তবে অনেকটাই অগ্রগতি হল।
সেই কথায় সায় দিয়ে পুতিন বলেন, যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়া খুবই আন্তরিক। তবে কিছু বিষয়ের মীমাংসা হওয়া দরকার। এই যুদ্ধকে ‘ট্রাজেডি’ হিসেবে উল্লেখ করেন রুশ প্রেসিডেন্ট। পুতিন কৃতজ্ঞতার মোড়কে মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপরও খানিক শর্ত চাপিয়েছেন।
বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আমন্ত্রণে তিনি বৈঠকে অংশ নিয়েছেন। পুতিন আশা করেন, দুই দেশের আলোচনার অগ্রগতি যাতে ইউক্রেন ও তার মিত্ররা ভেস্তে না দেয়, ডোনাল্ড ট্রাম্প তা নিশ্চিত করবেন। আসলে বিশ্বজুড়ে ট্রাম্পের শুল্ক-বাণ নিয়ে যে পরিস্থিতি, তাতে যুযুধান দু’পক্ষ ট্রাম্প-পুতিনের এই বৈঠক যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তা নিয়ে সংশয়ের বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই। বৈঠক থেকে বহু দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা সমাধানের আশা ছিল।
তার মধ্যে প্রধান অবশ্যই রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধে স্থায়ীভাবে ছেদ টানা। কিন্তু শেষপর্যন্ত তা হয়নি। আশ্চর্যজনকভাবে আলাস্কার এই বৈঠকে আমন্ত্রিতই ছিলেন না ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। তা নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন যথেষ্ট আপত্তি তুলেছে।
দু’দেশের মধ্যে যখন যুদ্ধবিরতি নিয়েই আলোচনা, তখন একপক্ষকে অন্ধকারে রেখে কীসের সিদ্ধান্ত হবে? এই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। বিশ্ব রাজনীতিতে চর্চা তুঙ্গে।
More Stories
পরিস্থিতি থমথমে নেপালে, একগুচ্ছ দাবি জানাল বিক্ষোভকারীরা
অগ্নিগর্ভ নেপাল ভারতীয়দের জন্য বিশেষ নির্দেশিকা কেন্দ্রে
‘জেন জি’-র কাছে নতিস্বীকার ওলি সরকারের,সমাজমাধ্যমের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা