Home » পরিস্থিতি থমথমে নেপালে, একগুচ্ছ দাবি জানাল বিক্ষোভকারীরা

পরিস্থিতি থমথমে নেপালে, একগুচ্ছ দাবি জানাল বিক্ষোভকারীরা

হিমালয়ের পাদদেশে ছবির মতো সুন্দর ছিমছাম ক্ষুদ্ররাষ্ট্রের সড়কে এখন সেনাবাহিনী ঘুরে বেড়াচ্ছে। তা সত্ত্বেও বিক্ষিপ্ত প্রতিবাদ হিংসাত্মক রূপ নিচ্ছে বহু জায়গাতেই। এত কিছু সত্ত্বেও জেন জি গোষ্ঠীর দাবি, গত দুদিন ধরে যে ভাঙচুর, অগ্নিকাণ্ড, লুটতরাজসহ ধ্বংসাত্মক কাজ চলছে, তার সঙ্গে আন্দোলনকারীদের কোনও সম্পর্ক নেই। তাদের অভিযোগ, আন্দোলনে বাইরে থেকে ঢুকে পড়া সুবিধাবাদী শ্রেণির লোকজন জেন জি-র মুখে কাদা মাখাতে এসব হিংসা ও ধ্বংস চালাচ্ছে। মঙ্গলবারের তুলনায় বুধবার নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু শহরের পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। নেপালের এখন সেনার শাসকল। সেনাবাহিনী কার্ফু জারি করেছে। হিংসা ও ভাঙচুরের জড়িত বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। লুঠ করা আগ্নেয়াস্ত্র অবিলম্বে ফেরত দিতে বলা হয়েছে আন্দোলনকারীদের। এত কিছুর মধ্যেও প্রতিবাদকারীদের দাবি, এর মধ্যে ঢুকে পড়েছে বাইরের লোকজন। প্রতিবাদকারীরা একটি বিবৃতিতে বলেছে, নেপালের জেনারেশন জি এই আন্দোলন সংঘটিত করেছিল। দাবি ছিল, স্বচ্ছতা, বিশ্বাসযোগ্য সরকার গঠন ও দুর্নীতির অবসান। আন্দোলন ছিল অহিংস এবং শান্তিপূর্ণ নাগরিক আচরণের নীতি-আদর্শমাফিক প্রতিবাদ প্রদর্শন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাঁরা খুবই দায়িত্বশীলভাবে পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়, নাগরিকদের সুরক্ষা বজায় থাকে এবং সরকারি সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি না হয়, তার দিকে নজর রেখেছিল। তবে জেন জি গোষ্ঠীর দাবি, গত দুদিন ধরে যে ভাঙচুর, অগ্নিকাণ্ড, লুটতরাজসহ ধ্বংসাত্মক কাজ চলছে তার সঙ্গে আন্দোলনকারীদের কোনও সম্পর্ক নেই। অশান্তি পাকিয়েছে বহিরাগতরা। এদিকে, সেনাবাহিনীও তাদের বক্তব্যকে মান্যতা দিয়ে বলেছে, বিভিন্ন লোকজন ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী শক্তি আন্দোলনের ভিতর ঢুকে পড়েছিল। যারা সরকারি সম্পত্তি হানি, লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, অস্ত্র লুঠ করেছে। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের পর নয়া সরকার গঠনের প্রক্রিয়ার মুখেই নেপালের জেন জি বিক্ষোভকারীরা বেশ কিছু রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক দাবিদাওয়া তুলে ধরেছে বিবৃতিতে। যার মধ্যে প্রথম হল, গত তিন দশক ধরে রাজনীতিকরা দেশের যে সম্পদ ও অর্থ লুট করেছে, তার সুবিচার। আন্দোলনে নিহতদের শহিদ ঘোষণা করতে হবে। মৃতদের পরিবারের হাতে রাষ্ট্রীয় সম্মান ও স্বীকৃতি তুলে দিতে হবে। বেকারি, পরিযায়ী নেপালি রোখা ও সামাজিক সুরক্ষা ও নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছে। বেশ কয়েকটি দাবি রয়েছে তরুণ তুর্কিদের …..
চলতি সংসদ বরখাস্ত করে নতুন সরকার গঠন করা, নাগরিক, বিশেষজ্ঞ ও যুব সম্প্রদায়কে নিয়ে একটি সংবিধান সংশোধন কমিটি গঠন অথবা নতুন করে সংবিধান রচনা করা। অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন করাএই নির্বাচন প্রক্রিয়া কারও নিয়ন্ত্রণে না হয় অর্থাৎ স্বাধীন, স্বচ্ছ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়।প্রত্যক্ষ নির্বাচিত একটি প্রশাসনিক কর্তৃত্ব গঠন করা, জাতীয় সম্পত্তি লুট করা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করা
নেপাল এখনও অশান্ত। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে কেপি শর্মা ওলির ইস্তফার পরেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি নেপালে। বর্তমানে ভারতের পড়শি দেশের শাসনভার সেনার দখলে। রাস্তায় রাস্তায় টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। তবুও পরিস্থিতি বেগতিক। অবাধে চলছে লুটতরাজ। ব্যাঙ্ক ডাকাতির খবর যেমন মিলছে, তেমনই জেল থেকে পালাচ্ছে কয়েদিরা। নিশানা করা হচ্ছে শিল্পপতি ও নেতাদের বাড়িকে। জেল ভেঙে পালানোর চেষ্টা করেন শয়ে শয়ে বন্দি। প্রতিরোধ করতে গেলে আক্রান্ত হন নিরাপত্তারক্ষীরা। পাল্টা গুলিও চালান তাঁরা। জানা গিয়েছে, বাঁকের সংশোধনাগার থেকে পালানোর চেষ্টা করায় সেনার গুলিতে বেশ কয়েকজনের জনের মৃত্যু হয়েছে। বাঁকে, পোখরান জেলে হামলা চালান আন্দোলনকারীরা। শয়ে শয়ে বন্দি বিভিন্ন জেল থেকে পালিয়েছে। নৌবস্তা জেলের প্রধান জানিয়েছেন, কিশোর কয়েদিরা গেট ভেঙে পালানোর চেষ্টা করতেই গুলি চালানো হয়। যা পরিস্থিতি তাতে স্পষ্ট, পরিস্থিতি একই রকম খারাপ। জেন জি বিক্ষোভে সরকার পতন তো বটেই, হিংসায় এখনও পুড়ছে এভারেস্টের দেশ। গুরুতর এই পরিস্থিতিতে নেপালের পরিস্থিতি সামাল দিতে মাঠে নেমেছে সেনা। বিকেল ৫টা থেকে দেশজুড়ে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
মৌলিক পাঁচটি প্রতিষ্ঠান যেমন- শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিচারবিভাগ, নিরাপত্তা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার কাঠামোগত সংস্কার ও পুনর্গঠনের দাবি তুলেছে জেন জি গোষ্ঠী
জেন জি গোষ্ঠী জানিয়েছে, এই আন্দোলন কোনও দল বা ব্যক্তির নয়। গোটা নবীন প্রজন্ম এবং দেশের ভবিষ্যতের জন্য। প্রথমেই জরুরি শান্তি বজায় রাখা। তা একমাত্র সম্ভব নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার ভিত রচনার মধ্য দিয়ে।

About Post Author