সময় কলকাতা, বীথিন সরকার:- মহাকুম্ভে সন্ত্রাসের ছায়া! সাধুর ছদ্মবেশেও জঙ্গিরা হানা দিতে পারে মেলায়।এমনটাই আশঙ্কা করছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। কিন্তু সেই ছক ভেস্তে দিতে প্রস্তুত উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। ‘মহাকুম্ভে মাছিও গলতে দেব না’ আশ্বস্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।স্থল, জল, আকাশ- তিন জায়গা থেকেই চালানো হবে কড়া নজরদারি। থাকছে সমস্ত রকম কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য বিশেষ সশস্ত্র বাহিনী এবং সাদা পোশাকের পুলিশ। বসানো হয়েছে ‘অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম’। পাশাপাশি জোর দেওয়া হচ্ছে সাইবার নিরাপত্তার উপরেও। যাতে কোনও দিক দিয়েই ফাঁক গোলে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
নিরাপত্তায় থাকছে ডিজিটাল প্রযুক্তি
উল্লেখ্য, এবারে মেলা আয়োজনে ডিজিটাল প্রযুক্তিকে ব্যাপক হারে কাজে লাগাচ্ছে যোগী সরকার। তৈরি করা হয়েছে ‘মহাকুম্ভ ল্যান্ড অ্যান্ড ফেসিলিটি অ্যালোকেশন’ অ্যাপ। সেখানে এক ক্লিকেই জানা যাচ্ছে পুণ্যার্থীদের প্রয়োজনের যাবতীয় তথ্য। এই অ্যাপের মাধ্যমেই পরিষেবা মিলছে দ্রুত। মেলায় অংশগ্রহণের আবেদন করা যাচ্ছে। মেলা প্রাঙ্গনে স্থান পাওয়া এবং পরিষেবা সংক্রান্ত অনুমোদনের মিলেছে কি না, তাও বলে দেবে এই বিশেষ অ্যাপ। এছাড়া থাকছে আন্টি রিমোট সিস্টেম। যার ফলে দূর থেকে সরকারি প্রশাসন ছাড়া কোন কিছু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।
ইতিমধ্যেই গোয়েন্দা তথ্য জোরদার করার জন্য, মেলা সংলগ্ন রাস্তার বিভিন্ন বিক্রেতা, রিকশা চালকদের পুলিশ ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। আখড়া, মহামন্ডলেশ্বর, খালসা, ডান্ডিবারা, খাকচৌক এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জন্য জমি বরাদ্দও সম্পন্ন হয়েছে। যোগী কড়া নির্দেশ দিয়েছেন, মেলায় সাধুদের যথাযথ সম্মান জানাতে হবে। প্রতিনিয়ত তাঁদের সহযোগিতার সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখতে হবে। প্রশাসনের কাছে খবর রয়েছে, মহাকুম্ভ নিয়ে কিছু ভুয়ো ওয়েবসাইট বা অ্যাপ তৈরি করে প্রতারণার ছক কষা হয়েছে। এই নিয়ে যোগী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এটা দুঃসাহসিক পদক্ষেপ।
পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
এমন অভিযোগ উঠলে পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।মেলা চত্বরে ২৫টি জায়গায় রেশন বিতরণ হবে। তার জন্য ৫টি গুদাম ও ১২৫টি অস্থায়ী রেশন দোকান তৈরি করা হয়েছে। ৬টি পুণ্যস্নান উৎসবে তীর্থযাত্রীদের উপর ফুল বর্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সকলকে সময়ের মধ্যে সমস্ত কাজ শেষ করার নির্দেশ। মেলা শুরু সময় অনুযায়ী কাজ করার কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী।
আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে মেলা। এই মেলা ভারতে হিন্দু পুণ্যার্থীদের সবচেয়ে বড় সমাবেশ। প্রয়াগরাজে গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতীর সঙ্গমস্থলে ৪০ কোটি পুণ্যার্থীর জন্য গড়ে তোলা হচ্ছে এক অস্থায়ী নগরী। ১৫ বর্গমাইল এলাকায় গড়ে তোলা সেই অস্থায়ী নগরী। নগরীর আয়তন নিউইয়র্ক নগরের ম্যানহাটান বরো এলাকার দুই–তৃতীয়াংশ। এই মহাকুম্ভে সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা রয়েছে। তাই কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ যোগী সরকার।
জানা গিয়েছে, মেলা প্রাঙ্গনে নিরাপত্তা আরও আঁটসাঁট করা হচ্ছে।জল-স্থল-আকাশপথে চলবে কড়া নজরদারি। এছাড়া মোতায়েন করা হবে ড্রোন বিধ্বংসী সিস্টেম। সম্ভাবনা হয়েছে সাইবার হানারও। তাই মুখ্যমন্ত্রী যোগীর নির্দেশে সাইবার নিরাপত্তার জন্য বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে।
More Stories
বাংলাদেশ সীমান্তে ঘুরতে এসে ভারতে অনুপ্রবেশ, তারপর কি হল?
সিলামপুর কিশোর হত্যা: ‘লেডি ডন’ জিকরা গ্রেপ্তার, তিনজনকে আটক
পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গের এক মহিলা দন্ত চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করল মুম্বাই পুলিশ