সময় কলকাতা ডেস্ক, ২১ ফেব্রুয়ারি: কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বুধবার থেকে ফের দিল্লি চলো-র ডাক দিয়েছিল কৃষকদের বিভিন্ন সংগঠন। বুধবার একাধিক দাবিতে হরিয়ানা-দিল্লি সীমান্তে আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল একাধিক রাজ্যের কৃষকেরা। জানা গিয়েছে, দিল্লির উদ্দেশ্যে কৃষকেরা যাত্রা শুরু করলে পুলিশ বাধা দেয়। কৃষকরা ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে গেলে পুলিশ লাঠি চালায় ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। এরপরই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জখম হন ২৪ বছরের আন্দোলনরত এক কৃষক। গুরুতর যখন অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অন্যদিকে এই ঘটনার পরই কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা কৃষকদের বিস্তর আলোচনায় বসার আর্জি জানান। তিনি বলেন, ‘আমি কৃষক নেতাদের কাছে সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনায় এগিয়ে আসার আবেদন করছি।’ এর আগে গত রবিবারই কৃষক আন্দোলন চলাকালীন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল বছর সত্তরের মনোজিৎ সিং-এর। তার আগে গত ১৬ই ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভের মাঝে প্রাণ হারান ৭৮ বছরের জ্ঞান সিং।
প্রসঙ্গত, কৃষকদের জন্য পেনশন, ফসলের জন্য ন্যূনতম সমর্থন মূল্যের গ্যারান্টি দেওয়ার আইন, শস্যবিভাগ এবং তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর বাতিলের দাবিতে ফের দিল্লি চলো ডাক দিয়েছিল পাঞ্জাব হরিয়ানা সহ একাধিক রাজ্যের কৃষকেরা। কৃষকরা জানিয়েছিল, সরকারের দেওয়া প্রস্তাবে তাদের স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে না। কার্যত সে কারণেই সরকারের পক্ষ থেকে যে প্রস্তাব এসেছে, তা খারিজ করেছে কৃষকেরা। ফলে বুধবার থেকে দিল্লির সীমান্ত এলাকাগুলিতে কৃষকদের বিক্ষোভ শুরু হয়। রবিবার কেন্দ্র ও কৃষকদের মধ্যে চতুর্থ দফা আলোচনা হয়। যেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে পুরনো ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে শুধুমাত্র ডাল, ভুট্টা এবং তুলা কেনার নিশ্চয়তা দিতে চাওয়া হয়েছিল। আগামী পাঁচ বছরের জন্য এই ব্যবস্থা চালু রাখার প্রস্তাবও দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু কৃষকরা কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।
উল্লেখ্য, কৃষকদের জন্য পেনশন, ফসলের জন্য ন্যূনতম সমর্থন মূল্যের গ্যারান্টি দেওয়ার আইন, শস্যবিমা এবং তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর বাতিলের দাবিতে এর আগে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ‘দিল্লি চলো’র ডাক দিয়েছিল পঞ্জাব, হরিয়ানা সহ একাধিক রাজ্যের কৃষকেরা। কিষান মজদুর মোর্চা-সহ ২০০টিরও বেশি কৃষক সংগঠন এই আন্দোলনে শামিল হয়। সকাল থেকেই জড়ো হতে শুরু করেছেন কৃষকরা। কৃষক আন্দোলনের আঁচ রাজধানীতে যাতে না পড়ে, সেই কারণে গোটা রাজ্যজুড়ে জারি হয়েছিল ১৪৪ ধারা।অন্যদিকে, কৃষকদের ‘দিল্লিচলো’ রুখতে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছিল হরিয়ানা সরকার। হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে ১৩ তারিখ রাত পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছিল। তবে, ভয়েস কলের ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়নি। চণ্ডীগড় থেকে দিল্লি যাওয়ার জন্যও বিকল্প রাস্তা ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কৃষকদের মিছিল রুখতে হরিয়ানা পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে রাস্তায় ত্রিস্তরীয় ব্যারিকেড বসানো হয়। অতিরিক্ত ৫০ কোম্পানি পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পাশাপাশি আন্দোলনকারীরা যাতে অন্যান্য জেলা থেকে হরিয়ানায় ঢুকতে না পারে, কার্যত সেই কারণেই রাজ্যের সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়।
More Stories
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেআইনিভাবে মানুষ পাচারের বিরুদ্ধে, এফআইআর রজু করল পাঞ্জাব পুলিশ
অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষক নেতা জগজিৎ সিং দাল্লেওয়াল, ১৪ ই ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় সরকার ও কৃষক নেতাদের মধ্যে বৈঠকের সম্ভাবনা
UPSC-তে দেশে প্রথম স্থান অধিকার করল শিলিগুড়ির ছেলে জয়দীপ রায়