সময় কলকাতা ডেস্ক, ২৪ সেপ্টেম্বরঃ “চল রাস্তায় সাজি ট্রাম লাইন”, আর ট্রাম লাইন সাজা হবে না নন্দনা-ইন্দ্রনীলদের। তিলোত্তমার রাস্তা থেকে উঠে যাচ্ছে ট্রামলাইন। ঐতিহ্যের শহর কলকাতা। আর তার এই ঐতিহ্যের এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হল এখানকার ট্রাম পরিষেবা। এই ট্রামের চাকার শব্দে লুকিয়ে আছে পুরানো ‘কলিকাতার’ অনেক ইতিহাস। তবে এবার শহরের ইতিহাস বহন করা চাকাগুলোর ঠাঁই হবে না রাস্তায়। পরবর্তী প্রজন্ম এবার শুধু মিউজিয়াম অথবা ইতিহাস বইয়ের পাতায় দেখবে তাদের। কারণ কলকাতা থেকে কার্যত উঠে যাচ্ছে ট্রাম। শুধুমাত্র ট্রামের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে ‘জয় রাইড’ হিসাবে কলকাতার একটিমাত্র রুটে চালু থাকবে ট্রাম। বাকি সমস্ত জায়গা থেকে এই পরিষেবা মুছে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুনঃ বিচারের বাণী: ইন্ডিয়া’স ডটার – নির্ভয়া
দেশের একমাত্র শহর কলকাতা, যেখানে চলে ট্রাম। ইংরেজ আমলে দেশ যখন পরাধীনতার অভিশাপে ধুঁকছে তখন থেকে আজ পর্যন্ত কলকাতার রাস্তায় থামেনি ট্রামের চাকা। কত গুলি, কত বোমা, রাজপথে কত বিপ্লবীর রক্তের সাক্ষী এই ট্রাম। তবে নস্ট্যালজিয়ার নজরে এর মূল্য থাকলেও শহরের ব্যস্ততম রাস্তায় ট্রাম যানজট তৈরি করে বলেই মত প্রশাসনের। তার ওপর ধীর গতি সম্পন্ন ট্রামে উঠে সময় নষ্ট করতে রাজি নন শহরবাসী। কার্যত করোনা কাল থেকেই শহরের একের পর এক রুটে বন্ধ হয়েছে এই পরিষেবা। আপাতত হাতেগোনা চারটি রুট বেঁচে আছে। এবার তাও বন্ধ করে মাত্র একটি রুটেই ‘জয় রাইড’ হিসাবে বহাল থাকবে ট্রাম পরিষেবা। ধর্মতলা-ময়দানের মধ্যে তা চলাচল করবে। এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর লাগাতে আদালতের দ্বারস্থ হবে রাজ্য। সোমবার এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী।
আরও পড়ুনঃ Enamul Haque: অনুব্রতর পর এবার জামিনে জেল মুক্তি এনামুল হকের
তিনি বলেছেন, “ট্রাম কলকাতার ঐতিহ্য, তাই পর্যটকদের স্বার্থে এসপ্লানেড থেকে ময়দান পর্যন্ত হেরিটেজ আকারে একটি সুসজ্জিত ট্রাম চালু থাকবে। বাকি কোনও রুটে আর ট্রাম চলবে না। শহরে ট্রাম পরিষেবা চালু রাখার দাবিতে ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছিল। মামলায় এদিন কোর্ট আমাদের মতামত জানাতে বলেছে। আমরা ট্রাম বন্ধ করার সিদ্ধান্ত জানাব। প্রয়জনে ট্রামের লাইনও রাস্তা থেকে তুলে ফেলব। এই যানজটের মধ্যে ট্রাম চালানো সম্ভব নয়।”
সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে না পারায় কলকাতার বুক থেকে হারিয়ে গিয়েছে অনেক কিছুই। আজকের ডিজিট্যাল যুগে স্মৃতির পাতা ছাড়া মহানগরীর আর কোথাও চোখে পড়ে না দোতলা বাস, ঘরে ঘরে রেডিও, কানে আসে না গ্রামোফোনের সুর, নেই টেলিগ্রাফ। এবার তাদের দলেই নাম লেখাবে ট্রামও। শহরের কোনও এক লোহার কারখানায় পরে থাকবে তাদের কঙ্কাল। তাতে পড়বে ধুলো, দিনে দিনে পুরু হবে ধুলোর স্তর।
More Stories
নাটকীয় দৃশ্য। সেনার ট্রাক আটকাল কলকাতা পুলিশ !
উত্তর ২৪ পরগনায় তৃণমূলের রক্তদান শিবিরে তুমুল উত্তেজনা! মঞ্চেই দুই গোষ্ঠীর চেয়ার ছোড়াছুড়ি
অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করল এসএসসি, তালিকায় সোনারপুরের তৃণমূল কাউন্সিলরের নাম