মধুমিতা দাস : এমএ পাস হাবরার চায়েওয়ালি টুকটুকি দাস হোক কিংবা শান্তিনিকেতনের এমএ পাস মোমো বিক্রেতা যুবক সৌভিক, সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে ক্রমশই ছড়িয়ে পড়ছে তাদের জীবন সংগ্রামের কথা। এবার সামনে এল এমবিএ ফেল কচুরিওয়ালা এক যুবকের কথা।
‘MBA ফেল কচোড়ী বালা’। এমন নাম শুনে আপনারও নিশ্চয়ই মনে হবে এই নাম রাখা হয়েছে স্টলকে জনপ্রিয় করার উদ্দেশ্যেই, তা কিছুটা সত্যি হলেও এই নামের পেছনেও লুকিয়ে আছে এক যুবকের অপূর্ণ স্বপ্ন, যা পূরণ করতেই তার এই অভিনব উদ্যোগ।
এই যুবকের প্রকৃত নাম সত্যম মিশ্র। সে ২০১৮ সালে কাসগঞ্জের হজরত নিজামউদ্দিন ডিগ্রি কলেজ থেকে বিএসসি পাস করে। এরপর সত্যম বেরেলির একটি কলেজে এমবিএ-তে ভর্তি হয়। কিন্তু সে প্রথম সেমিস্টারও পাশ করতে পারেনি। প্রকৃতপক্ষে, সত্যমের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। তাই পড়াশোনায় মনোযোগের অভাবে প্রথম সেমিস্টারে ফেল করে সে।
সত্যমের কথায়, পরিবারে আর্থিক অনটন থাকায় পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার পরেও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সামর্থ ছিল না। তাই মাঝপথেই তাকে এমবিএ পড়াশোনা ছেড়ে দেয় সে। এরপর দিনগুজরান করতে একটি চাকরি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও সত্যম কোন চাকরি পায়নি।
এমত পরিস্থিতিতে, সত্যম একটি শর্টব্রেড স্টল করার সিদ্ধান্ত নেয়। যাতে সে তার পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করতে পারে। সত্যম দু’মাস আগে লোহিয়া মূর্তির কাছে কচুরি বিক্রি শুরু করে আর তখন থেকেই তার স্টল জনপ্রিয়তা পায়।
আসলে এই স্টলটির জনপ্রিয়তার প্রধান কারণ এর নামের বিশেষত্ব। সত্যমের স্টলটির বয়স মাত্র তিন মাস। এরই মাঝে গোটা এলাকা জুড়ে তার স্টল বিখ্যাত হয়ে উঠেছে। স্টল থেকে সব মিলিয়ে প্রতিমাসে কমবেশি 10000 টাকা উপার্জন করে সত্যম। জানা গেছে, সত্যমের পরিবারে মা-বাবা ছাড়াও রয়েছেন চার বোন এবং এক বড় ভাই। সত্যমের স্বপ্ন যদি এভাবে তার স্টল চলতে থাকে তবে আবারও সে এমবিএতে ভর্তি হবে এবং অসম্পূর্ণ পড়াশোনা শেষ করবে।সাধারণ মানুষ শুধু সত্যমের স্টলে খেতেই আসেন না, তার সাথে কথা বলে, আগ্রহ নিয়ে গল্প শোনে। শোনে এই অনন্য নামের পেছনের যন্ত্রণাদীর্ণ গল্প-কথা।
More Stories
বাঙালি পর্যটকদের জন্য : গরমে কাছেই ঝান্ডি ঘুরে আসুন, স্বস্তি মিলবে
হাতে ভর দিয়ে হাঁটেন তবুও পঞ্চাশ কিলোমিটার উজিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সভায় হাজির
গোদের উপর বিষফোঁড়া! গন্ডার তাড়াতে হাতি! ক্ষতি রুখতে গিয়ে দ্বিগুণ ক্ষতি! ভুট্টাক্ষেত সাবাড়!