সময় কলকাতা ডেস্ক : বারাসাত পুরনির্বাচনের একটি ওয়ার্ডের তৃণমূলের প্রার্থীপদ নিয়ে বারাসাতবাসী বিভ্রান্ত। প্রার্থীপদ নিয়ে পাওয়া যাচ্ছে নিত্যনতুন আপডেট।প্রতিদিন, এমনকি কয়েক ঘন্টার মধ্যেও ঘোষিত প্রার্থীর নাম বদলে যাচ্ছে। বারাসাতের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে তিন তিনবার তিনজন ভিন্ন প্রার্থীর নামপ্রকাশ পাওয়ার বার্তা গেছে। এরমধ্যে তৃণমূলের দলীয় সই সাবুদ সহ একজন প্রার্থীর নাম-ই ঘোষণা পেয়েছে।অথচ তিনিই এখন কার্যত সংকটে। তিনি কী সিদ্ধান্ত নেন সেজন্য তাকিয়ে বারাসাতের স্থানীয় রাজনৈতিক মহল। প্রার্থী আর কেউ নন, সমীর গাঙ্গুলি। সমীর গাঙ্গুলি একসময় কংগ্রেসের হয়ে বারাসাত পুরসভার কাউন্সিলার ও ছিলেন।পরে তিনি তৃণমূলে যোগদান করেন।
সমীর গাঙ্গুলি পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ হলেও ঘটনাচক্রে তার ভাগ্যাকাশে আঁধার জমেছে। তাঁকে তৃণমূলের তরফে বারাসাতের পুরভোটে ৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী করা হয়েছিল। কিন্তু ৯ নম্বর ওয়ার্ডে গতবারের বিজয়ী প্রার্থী দীপক কুমার দাসগুপ্তের ওপরে নির্বাচন কমিশনের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হতেই চিত্র পাল্টে যায়। তৃণমূল সূত্রে খবর এই ওয়ার্ডে প্রার্থী পাল্টে অবশেষে প্রার্থী করা হচ্ছে দীপক কুমার দাসগুপ্তকেই। আর এবিষয়ে সমীর গাঙ্গুলিকে প্রাথমিকভাবে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূলের বিশ্বস্ত সূত্রের খবর। স্বভাবতই যারপরনাই ক্ষুব্ধ সমীর গাঙ্গুলি। স্থানীয় রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের বক্তব্য, সমীর গাঙ্গুলি তৃণমূলের টিকিট না পেলে বিক্ষুব্ধ হয়ে নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়াতে পারেন। দেওয়াল লিখন সেরে প্রচারে নেমে পড়া সমীর গাঙ্গুলি বিদ্রোহী হতেই পারেন তেমন খবর পাওয়া যাচ্ছে। স্বয়ং সমীর গাঙ্গুলি মুখে কিছু না বললেও সূত্রের খবর তলায় তলায় তিনি সমর্থনের আশায় কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। কংগ্রেস সূত্রে খবরটিকে মান্যতা দেওয়া হয়েছে। তাঁরা সোমবার এবিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক শহর কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য,বারাসাতের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেসের রমরমা ছিল চিরকালই। প্রয়াত প্রবীণ ও প্রভাবশালী নেতা অরবিন্দ দাসগুপ্ত এই ওয়ার্ডে তৃণমূলের টিকিটে লড়ে হালে পানি পান নি।সহোদর ভাই দীপক কুমার দাসগুপ্তর কাছে তাঁকে হারতে হয়। দীপক কুমার দাসগুপ্ত হালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে আসায় খবর ছিল ৯ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী করা হবে দীপক কুমার দাসগুপ্ত (ছানা ) কেই। সমীর গাঙ্গুলিকে তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি ৫ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থীপদ দেওয়ার কথা ওঠে। কিন্তু প্রার্থী ঘোষণার আগের রাতে তাঁর ভোটে দাঁড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করে নির্বাচন কমিশন। প্রথম ভাইরাল লিস্টে দীপক কুমার দাসগুপ্তের নাম প্রার্থী হিসেবে দেখা গেলেও কয়েকঘন্টার মধ্যে তৃণমূলের ‘অফিসিয়াল’তালিকায় নাম দেখা যায় সমীর গাঙ্গুলির।৫ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হন কণিকা রায়চৌধুরী।অবস্থা পাল্টেছে দুদিনের মধ্যে। এখন কি করবেন সমীর গাঙ্গুলি?
সমীর গাঙ্গুলি সুভদ্র মানুষ হলেও তাঁকে এখনও সম্পূর্ণ ভরসা করতে পারছেন না কংগ্রেস নেতৃত্ব। এবিষয়ে এখনও মন্তব্য করছেন না সমীর গাঙ্গুলি তবে একপ্রস্থ দেওয়াল লিখনের পরে তিনি গভীর দোলাচলে। ঘনিষ্ঠ মহলের খবর, চরম সিদ্ধান্ত নিতেই পারেন সমীর গাঙ্গুলি। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের জনৈক শীর্ষ নেতা বলছেন, দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার সাহস সমীর গাঙ্গুলি দেখাতে পারবেন না। বারাসাত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অশনি মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সমীর গাঙ্গুলি বিক্ষুব্ধ বলে কোনও খবর তাঁর কাছে নেই। তৃণমূল সভাপতি যাই বলুন, পিংপং বল হতে হলে সমীর গাঙ্গুলির মত প্রবীণ নেতার পক্ষে চটে যাওয়াই স্বাভাবিক। তবে শেষপর্যন্ত বিদ্রোহ তিনি করেন কিনা এটাই দেখার।
More Stories
ট্রাম্পের বাণিজ্য হুমকিতে কেন চুপ মোদি? তোপ দাগল কংগ্রেস
জাতির উদ্দেশে ভাষণ প্রধানমন্ত্রী মোদির
সমাজ মাধ্যমে পাকিস্তানকে সমর্থন জানিয়ে পোস্ট। যার জেরে খেতে হল গণপিটুনি বারাসাতের এক মাংস বিক্রেতাকে