সময় কলকাতা ডেস্ক, ২২ আগস্ট: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার আঁচ এবার বিধানসভাতেও। মঙ্গলবার বিধানসভায় মুলতুবি প্রস্তাব আনল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন শুভেন্দু-সহ অন্যান্য বিজেপি বিধায়করা কালো উত্তরীয় গলায় জড়িয়ে ছাত্রমৃত্যুর প্রতিবাদে বিধানসভা ওয়াক আউট করেন। এদিন বিধানসভায় মুলতুবি প্রস্তাবটি পাঠ করেন শুভেন্দু অধিকারী। প্রস্তাব গ্রহণ করেন অধ্যক্ষ। এরপর অধিবেশন শুরু হলে শুভেন্দু বলেন,দেশ বিরোধী শক্তির ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে যাদবপুর। উগ্র বাম সংগঠন সক্রিয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। যাদবপুরে রুলস-রেগুলেশনস কিছুই মানা হয় না। মানা হলে গ্রামের মেধাবী ছাত্রটির জীবন এভাবে চলে যেত না। প্রাক্তন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী সিসিটিভি লাগাতে চেয়েছিলেন বলে আমাকে জানিয়েছেন। কেন তাঁর মেয়াদ শেষের আগে কেন সরানো হল? মাদক পাচার চক্র এবং দেশ বিরোধী শক্তিদের সরাতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে? এই ঘটনার পর সরকার কী ব্যবস্থা নেবে?’ বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসিটিভি বসানো নিয়ে হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি যেসব নির্দেশিকা দিয়েছিলেন, সে সব মানা হয়নি কেন, এদিন তা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কাছে জানতে চান শুভেন্দু অধিকারী।
এদিকে,যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় ৯ আগস্ট রাতে পুলিশকে কেন ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া হয়নি? এবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে সেই কৈফিয়ত চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। ইতিমধ্যেই পুলিশের তরফে পৃথক একটি মামলা রুজু করে তদন্তও শুরু হয়েছে। সোমবার যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে এই নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের প্রশ্ন, যাদবপুরে ৯ আগস্ট রাতে কেন পুলিশকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়? আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহি করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ইউনিয়নকেও মামলায় পার্টি করার নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। জানা গিয়েছে, ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেন তৃণমূলের সুদীপ রাহা। এরপরই হস্টেলে পুলিশ কে ঢুকতে না দেওয়ার কারণ জানানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষর কৈফিয়ত তলব করেন বিচারপতি। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২৮ আগস্ট বলেই জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন ছাত্রমৃত্যুর জের, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির বৈঠকে একাধিক সিদ্ধান্ত
প্রসঙ্গত, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পরেই সোমবার অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির বৈঠক ডেকেছিলেন নবনিযুক্ত উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ। ওই বৈঠকে র্যাগিং এবং বুলিং বন্ধ করতে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটিকে আরও তৎপর হতে বলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন এনজিওর থেকেও সাহায্য নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য। জানা গিয়েছে, যে সমস্ত অধ্যাপকরা ছাত্রছাত্রীদের মেন্টর হিসেবে কাজ করেন, তাঁদের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করা হবে। র্যাগিং রুখতে ইউজিসির নিয়ম মেনে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির তরফে স্নাতক স্তর থেকে শুরু করে স্নাতকোত্তর স্তর পর্যন্ত সমস্ত পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলা হবে বলেই জানা গিয়েছে। র্যাগিং রুখতে পড়ুয়াদের নিয়মিত কাউন্সেলিং করার পাশাপাশি তাঁদের অভিভাবকদের সঙ্গেও কথা বলা হবে। উপাচার্য জানিয়েছেন,বিশ্ববিদ্যালয় এবং হস্টেলে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে। ইতিমধ্যেই ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম চালু করার কথা ভাবা হয়েছে। এছাড়াও হস্টেলের আবাসিকদের জন্য আইডি কার্ডের ব্যবস্থা করা হবে। বহিরাগত কাদের ঢুকতে দেওয়া হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গেটে লগবুক রাখা হবে। তাতে নাম লিখে তবেই ঢোকা যাবে হস্টেলে।
More Stories
নাটকীয় দৃশ্য। সেনার ট্রাক আটকাল কলকাতা পুলিশ !
উত্তর ২৪ পরগনায় তৃণমূলের রক্তদান শিবিরে তুমুল উত্তেজনা! মঞ্চেই দুই গোষ্ঠীর চেয়ার ছোড়াছুড়ি
অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করল এসএসসি, তালিকায় সোনারপুরের তৃণমূল কাউন্সিলরের নাম