সময় কলকাতা ডেস্ক, ১৮ জুলাইঃ কুলতলিকাণ্ডে অবশেষে বড়সড় সাফল্য পুলিশের। দু’দিন লুকিয়ে থাকার পর অবশেষে ধরা পড়ল কুলতলির সেই নকল সোনার কারবারি, সাদ্দাম সর্দার। কুলতলির চুপড়িঝাড়া এলাকার একটি মাছের ভেড়ির আলা ঘর থেকে সাদ্দামকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃত সাদ্দামের বিরুদ্ধে অতীতেরও বেশকিছু অভিযোগ রয়েছে বলে জানান বারুইপুর পুলিশ জেলার এসপি পলাশচন্দ্র ঢালি। এই চক্রে মোট ১২ থেকে ১৪ জড়িত বলে জানান তিনি। সাদ্দামের পাশাপাশি এদিন ওই ভেড়ির মালিক তথা কুলতলির সিপিএম নেতা মান্নান খানকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। মূলত টেকনিক্যাল ও হিউম্যান ইন্টালিজেন্স ব্যবহার করেই গ্রেফতার করা হয়েছে কুলতলি প্রতারণা চক্রের মূল পাণ্ডা সাদ্দামকে। তার মধ্যে ডাকাতি বা অস্ত্র আইনেও অভিযোগ রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে সাদ্দামকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তথ্য উঠে আসতে পারে বলেই মনে করছে পুলিশ।
গত সোমবার পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে গিয়ে সিপিএম নেতা মান্নানের মাছের ভেড়িতে আশ্রয় নেন সাদ্দাম। সেই ভেড়ির আলাঘর থেকেই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার থেকে সাদ্দামের খোঁজ চালানো হলেও, সে নাকের ডগাতেই লুকিয়েছিল একটি মাছের ভেড়ির চালাঘরে। বুধবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে চুপড়িঝাড়া এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। নির্দিষ্ট মাছের ভেড়ির চালাঘরটি ঘিরে ফেলে তারা। সেখানেই লুকিয়ে ছিল সোনা পাচার চক্রের মাথা সাদ্দাম, সে সময়ে ঘুমোচ্ছিল সে। পুলিশকে দেখেই ফের পালানোর চেষ্টা করে, কিন্তু হাতেনাতে তাকে ধরে ফেলে পুলিশ। ওই ভেড়িতে সাদ্দামকে যে আশ্রয় দিয়েছিল, সেই মান্নান খানকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সাদ্দামের ভাই সইরুলকে এখনও খুঁজছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা ছিল, সাদ্দাম কুলতলি থেকে বেশি দূর পালাতে পারেনি। আশেপাশের সবকটি থানাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল, সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাছেও সাদ্দামের ছবি পাঠানো হয়েছিল। ফলে তার এলাকাছাড়া হওয়া সম্ভব ছিল না। তাই বলে যে কুলতলির মধ্যেই এভাবে লুকিয়ে থাকবে সে, তাও ভাবতে পারেনি পুলিশ।
আসল সোনার মূর্তির ছবি দেখিয়ে নকল মূর্তি বিক্রি করত এই সাদ্দাম। শুধু নকল সোনা নয়, বহুমূল্য মূর্তিরও কারবার চালাত তার দল। কারবার চলত জাল নোটেরও। লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে নকল সোনা গছিয়ে দেওয়া হত ক্রেতাদের। শুধু তাই নয় নিজেদের ডেরায় ঢুকিয়ে লুঠপাট ও খুন করারও অভিযোগ রয়েছে সাদ্দাম ও তার দলবলের বিরুদ্ধে। প্রায় ১৫ বছর ধরে চলছে এই কারবার। এখন পুলিশের তল্লাশি শুরুর পরেই গা ঢাকা দিতে থাকে এই চক্রের লোকজন। খবর পেয়ে সোমবারই সাদ্দামকে ধরতে গ্রামে ঢুকেছিল পুলিশ। কিন্তু প্রবল বাধার মুখে পড়ে তারা। অভিযোগ, সাদ্দামকে ছিনিয়ে নিতে মারধর করা হয় পুলিশকে। সাদ্দামের ভাই সইরুল পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তারপর থেকেই বেপাত্তা দুই ভাই। তাদের স্ত্রীদের আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। তারপরেই শুরু হয় সাদ্দামের বাড়িতে তল্লাশি। সাদ্দামের খাট সরাতেই মেলে ৩০ ফুটের বাঁধানো সুড়ঙ্গ। যেই সুড়ঙ্গ গিয়ে শেষ হয়েছে মাতলা নদীতে। জারি ছিল তল্লাশি। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। বুধবার রাতেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ল কুলতলি প্রতারণা চক্রের মূল পাণ্ডা।
#SaddamSardar
#KultaliFraudCase
#সাদ্দামসর্দার
#Latestbengalinews
More Stories
স্কুলবাসের সঙ্গে ট্রেনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু দুই পড়ুয়ার
মুর্শিদাবাদে সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু দুই বন্ধুর!
স্কুলে শিক্ষক পদে চাকরির জন্য কবে থেকে আবেদন? লিখিত পরীক্ষা, ইন্টারভিউ কবে? জানাল এসএসসি