সময় কলকাতা ডেস্ক:- কারখানার থেকে হচ্ছে শব্দ দূষণ, শব্দের অত্যাচারে জর্জরিত হয়ে থানার দ্বারস্থ হয়েছিল কয়েকটি পরিবার। রীতিমত নোটিশ পাঠিয়ে থানায় ডাকা হয়েছিল বিষয়টি জানার জন্য। বিপন্ন পরিবারের অভিযোগ থানায় ডেকে রীতিমতো হুমকি , ধমক দেন পুলিশ আধিকারিক। আতঙ্কিত পরিবার উত্তর ২৪ পরগনা পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছেন।বাড়ির দেয়াল ঘেসে তৈরি হয়েছে কারখানা, যে কারখানার আইনি বৈধতা কি আছে তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন? আরে প্রশ্ন বারংবার তুলেছেন অশোক নগরের মালিকবেড়িয়ার বাগপোলের খানপাড়ার কয়েকটি পরিবার।
ঘটনার সূত্রপাত
ঘটনার সূত্রপাত বছরখানিক আগে। আনসার আলী খানের পরিবার সহ বেশ কিছু পরিবার বসবাস করে এই খান পাড়ায়। আনসার আলী খানের বাড়ির দেয়াল ঘেঁষেই আচমকাই একটি কম্পিউটারাইজড এমবোডারি কারখানা তৈরি করে এলাকারই বাসিন্দা ফজলু খান ও আরাবুল খান। শাসকঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণে প্রথমে একটি মেশিন পরে আরো দুটো মেশিন বসিয়ে রম্বিয়ে কাজ শুরু করে আরাবুল ও ফজলু। কারখানায় দিবারাত্র শিফটিংয়ে কাজ হয়। আনসার আলী খান সহ আরো কয়েকটি পরিবারের অভিযোগ বাড়ির দেয়াল ঘেঁষে কারখানা থেকে বিকট শব্দ হয়। ফলে বাড়ির মধ্যে কথা বলতে গেলে উচ্চস্বরে কথা বলতে হয় সবাইকে। বাড়িতে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের পড়াশুনা প্রায় লাটে উঠেছিল। এই শব্দের অত্যাচারে মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়ে বাড়ির এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী।
খুদে বাচ্চারা বারাসাত আদালতের সামনে প্লাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখায়
শব্দের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ওই সমস্ত পরিবারের খুদে বাচ্চারা বারাসাত আদালতের সামনে প্লাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখায়।শিশুদের দাবি তাদের পড়াশুনোর উপযুক্ত পরিবেশ দিতে হবে।। আর অবিলম্বে এই শব্দ দূষণ এবং শব্দের অত্যাচার বন্ধ করতে হবে। শিশুদের এই দাবিকে মান্যতা দিয়ে আনসার আলীর পরিবার এবং পাশাপাশি অন্যান্য পরিবার অভিযোগ জানায় প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যপাল, পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড, উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার সহ একাধিক জায়গায় অভিযোগ জানানো সত্বেও অশোকনগর থানা অভিযোগ আইনত গ্রহণ করেনি।
সোমবার অশোকনগর থানা থেকে নোটিশ পাঠিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ এর জন্য থানায় ডাকা হয়। আনসার আলীর পরিবারের অভিযোগ থানায় ডাকার পরে পুলিশ আধিকারিক থানায় বসিয়ে আরাবুল খান ও ফজলু খানের সামনেই রীতিমতো ধমকান এবং জেল খাটানোর হুমকি পর্যন্ত দেন। রোজার মাস সারাদিন উপোস থাকার কারণে আনসার আলী খানের স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন বলেই ওই পরিবারের দাবি। অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণে তারা বারাসাত হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যান। ইতিমধ্যে আনসার আলী খানের পরিবার পুরো বিষয়টা জানিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। আনসার আলী খানের স্ত্রীর অভিযোগ সবার সামনে ওই পুলিশ আধিকারিক রীতিমতো হুমকি দিয়েছেন।
যদি আনসার আলী খানের স্ত্রীর অভিযোগ সত্য হয় সেক্ষেত্রে একটা প্রশ্ন থেকেই যায় কি কারণে পুলিশ আধিকারিক তাদের অভিযোগ গ্রহণ না করে অভিযুক্ত আরাবুল ও ফজলু খানের সামনে ধমকালেন অভিযোগকারীনিকে। ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তাহলে কি আরাবুল ও ফজলু শাসক দল ঘনিষ্ঠ বলেই পক্ষপাতিত্ব করছে পুলিশ? এখন দেখার প্রশাসন কি ব্যবস্থা নেয়? নাকি অসহায় ভাবে এই পরিবারকে সহ্য করতে হবে এই শব্দ যন্ত্রণা?
More Stories
মুর্শিদাবাদে কত বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত?দ্রুত সমীক্ষার কাজ শেষ করার নির্দেশ মুখ্য সচিবের
রাজ্যবাসীর উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর খোলা চিঠি
ডুয়ার্সের পর্যটন শিল্পে নতুন পালক! খুলে গেল পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান