সময় কলকাতা ডেস্ক:- জঙ্গলমহলের প্রান্তিক জেলার আকাশ এই মুহূর্তে ছেয়ে গিয়েছে আগুনরঙা পলাশে। অযোধ্যাপাহাড় থেকে গড়পঞ্চকোট, বড়ন্তি জলাধার থেকে মরগুমা, রাশি রাশি পলাশে রাঙা চারপাশ। পথের দু’পাশে ছড়িয়ে রয়েছে তা। দুয়ারে কড়া নাড়ছে বসন্তোৎসব। দোল উপলক্ষে ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকদের আনাগোনাও বেড়েছে।
পরিবেশ রক্ষা করতে সতর্ক জেলা পুলিশ
জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘দোলে পুরুলিয়ার পলাশ দেখতে বহু পর্যটক ভিড় করেন। এই সময়ে লাল পলাশে পুরুলিয়া সেজে ওঠে। কিন্তু যদি কিছু মানুষ পলাশ ফুল ছেঁড়েন অথবা গাছের ডাল ভাঙেন, জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে আমাদেরও সতর্ক থাকতে হবে।’ এ ছাড়াও জেলার বিভিন্ন স্থানে জেলা পুলিশের কিয়স্কও থাকবে। সেই কিয়স্কগুলিতে সিভিক ভলান্টিয়ারেরা থাকবেন যে কোনও ধরনের সহায়তার জন্য।
ডিএফও জানাচ্ছেন
ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে পলাশ ফোটা শুরু হয়, ফুল থাকে এপ্রিলের গোড়া পর্যন্ত। কালবৈশাখীর মরশুম এলে ফুল ঝরে যায়। ডিএফও জানাচ্ছেন, অনেক জায়গাতেই খুব ছোট পলাশ গাছেরও দেখা মিলেছে, অর্থাৎ বীজ থেকে পলাশের স্বাভাবিক বংশবৃদ্ধি হচ্ছে। যেটা যথেষ্ট ইতিবাচক দিক। দোলে পলাশ রক্ষার পাশাপাশি প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষারও বার্তা দিচ্ছে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ।
সোশ্যাল মিডিয়ার সুবাদে পলাশের সৌন্দর্য জেলার গন্ডি পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্যের নানা প্রান্তে। প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ তার টানে ভিড় জমাচ্ছেন এই অঞ্চলে। ফলে বন দপ্তর থেকে জেলা পুলিশ, সর্বত্রই তৎপরতা তুঙ্গে। গত কয়েক বছর ধরে পলাশ সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছে বন দপ্তর। এখন যত্রতত্র পলাশ গাছ কাটা অথবা পলাশ ফুল ছেঁড়ায় বলবত হয়েছে কড়া নিষেধাজ্ঞা। এতে আগের চেয়ে পলাশের সংখ্যা অনেক বেড়েছে।
অযোধ্যাপাহাড় থেকে গড়পঞ্চকোটের রাস্তায়, মুরগুমা জলাধার, হুড়ার রাকাবের ঘন জঙ্গলপথে ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার টাঙানো হয়েছে ব্যানার বা হোর্ডিং। পর্যটকদের স্বাগত জানিয়ে লেখা হয়েছে, ‘পলাশ ফুল ছিঁড়বেন না, জঙ্গলে আগুন জ্বালাবেন না। পলাশের সৌন্দর্য উপভোগ করুন।’ ব্যানারে জেলা পুলিশের তরফে দুটি ফোন নম্বরও দেওয়া হয়েছে, যেখানে যোগাযোগ করলে মিলবে পুলিশি সহায়তা।
পুরুলিয়ায় মূলত উজ্জ্বল এবং ফিকে কমলা, দু’ধরনের পলাশই বেশি মেলে। এ ছাড়া হলুদ ও সাদা পলাশও অল্প রয়েছে। জেলা জুড়ে ড্রোন উড়িয়ে পলাশ গাছের সংখ্যা জানতে যে সমীক্ষা চালানো হয়েছিল, সেই তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে জেলায় পলাশ গাছের সংখ্যা আট থেকে বারো লক্ষ। গত পাঁচ-ছ’ছরে এই সংখ্যা ১০ থেকে ২০ শতাংশ বেড়েছে। তুলনায় হলুদ ও সাদা পলাশের সংখ্যা নগন্য। সবমিলিয়ে হলুদ ও সাদা পলাশের সংখ্যা ১২ থেকে ১৫টি।
More Stories
বাগানের ৩০ শতাংশ জমিতে পর্যটনের বিরোধিতায় এবার আন্দোলনের ডাক দিল লিবারেশন
কমছে গঙ্গার জলস্তর, আসন্ন গ্রীষ্মে জল-সঙ্কটের আশঙ্কা
বায়ু দূষণে গোটা পৃথিবীতে ভারত বর্ষ পঞ্চম স্থানে, ক্রমশ বাড়ছে উদ্বেগ