সময় কলকাতা ডেস্ক:- ইসরায়েলি কোম্পানি বা ইহুদী মালিকানা না থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের বাটা কোম্পানির প্রতি ক্ষোভের কারণ কি? এই প্রশ্নে তোলপাড় আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক এবং বণিক মহল।
তথ্যভিজ্ঞ মহলের ধারণা, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বাটা কোম্পানির তদানীন্তন কর্তার ভূমিকা থাকবার জন্যই বাংলাদেশের বর্তমান পাকিস্তানপন শাসকদলের নজরে পড়েছে বাটা।
প্রসঙ্গত, ১৯৭০ সালে বাটার তখনকার এক কর্মকর্তা প্রথম ঢাকায় আসেন। তিনি বাটা স্যু কোম্পানির প্রোডাকশন ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর ১৯৭১ সালের প্রথম দিকে বাটা স্যুয়ের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর হিসেবে টঙ্গীর কারখানায় নিয়োগ পান।
এরপর, ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী অপারেশন সার্চলাইটের নামে গণহত্যা চালায়। সে সময় বাটার এই কর্মকর্তা সেই রাতের ভয়াবহতার কিছু ছবি তুলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে পাঠান।
বাটা স্যু কোম্পানীর মত বহুজাতিক একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হওয়াতে তার অবাধ চলাচল ছিল সর্বত্র। সেই সুযোগে তিনি সম্পর্ক গড়ে তোলেন টিক্কা খান, রাও ফারমান আলী, নিয়াজিদের সাথে। আর অন্য দিকে, প্রধান সেনাপতি কর্নেল এমএজি ওসমানীর সঙ্গেও তিনি যোগাযোগ রাখতেন। তারপর পাকিস্তানীদের সব তথ্য ফাঁস করে দিতেন।
তারপর নিজেই বাটার শ্রমিকদের সংঘবদ্ধ করে টঙ্গীসহ সেক্টর ১ এবং ২ নম্বরে গড়ে তোলা গেরিলা বাহিনীকে নিজ দায়িত্বে প্রশিক্ষণ দেন। তিনি নিজেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। তারপর নিজেই নিজের জীবনকে বিপন্ন করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে নেমে পড়েছিলেন।
তিনি বাঙালি যোদ্ধাদের নিয়ে টঙ্গী-ভৈরব রেললাইনের ব্রীজ, কালভার্ট ধ্বংস করে পাক বাহিনীর যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত করতে থাকেন।
সে সময় তিনি ঢাকার অস্ট্রেলিয়ান ডেপুটি হাইকমিশনের গোপন সহযোগিতা পেতেন। এরপর তিনি রক্তক্ষয়ী টানা নয়মাস মুক্তিযুদ্ধ শেষে টঙ্গীতে ফিরে আসেন বিজয়ীর বেশে।
১৯৭৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশেই ছিলেন তিনি, তারপর নিজ দেশ অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যান।
তিনিই একমাত্র বিদেশী বাংলাদেশী যিনি মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য “বীর প্রতীক” খেতাব পান। এই মহান মানুষটির নাম “উইলিয়াম এ এস ঔডারল্যান্ড”। ২০০১ সালের ১৮ মে অস্ট্রেলিয়ার পার্থের একটি হাসপাতালে এই বিদেশী বাংলাদেশী মুক্তিযোদ্ধা তথা মহান ব্যক্তি তার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
More Stories
বাংলাদেশ সীমান্তে ঘুরতে এসে ভারতে অনুপ্রবেশ, তারপর কি হল?
সিলামপুর কিশোর হত্যা: ‘লেডি ডন’ জিকরা গ্রেপ্তার, তিনজনকে আটক
পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গের এক মহিলা দন্ত চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করল মুম্বাই পুলিশ