ধীরাজ দাস, সময় কলকাতা:
রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদককে ‘গরুপাচারকারী’ তকমা দিয়ে লোক্যাল ট্রেনে পড়ল পোস্টার।এছাড়াও তাঁকে চোর চিটিংবাজ, মাতাল প্রভৃতি বিভিন্ন বিশেষণে ভুষিত করা হয়েছে এই পোস্টারে।আর এই ঘটনায় রাজ্য বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দলের ছায়া দেখছে রাজনৈতিক মহল ।যদিও শনিবার সকালে বনগাঁ- বারাসাত লোকাল ট্রেনের কামরায় এরকম পোস্টার পড়ার বিষয়টি রাজনৈতিক মহলের মতে অস্বাভাবিক কিছু নয়। কারণ পরিষ্কার ভাবে পোস্টারটি বিজেপির অন্তর্দলীয় ক্ষোভের প্রকাশ। পোস্টারে বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের অপসারণ চাওয়া হয়েছে যা থেকে প্রকট হয়েছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জল্পনা। তবে পোষ্টারের বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি বিজেপি নেতৃত্বের তরফ থেকে ।
উল্লেখ্য,সম্প্রতি বিজেপি বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার বনগাঁর সাংসদের ও তাঁর ঘনিষ্ঠমহল পছন্দকে গুরুত্ব না দিয়ে গড়া হয়েছে মতুয়া প্রাধান্যহীন কমিটি।নতুন সভাপতি ও রাজ্য বিজেপির নতুন কমিটিতে বিভিন্ন পদে মতুয়া সম্প্রদায়ের নেতাদের বঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে।বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে বনগাঁ উত্তরের অশোক কীর্তনিয়া, গাইঘাটার সুব্রত ঠাকুর, হরীনঘাটার আসীম সরকার, রানাঘাট দক্ষিণের মুকুটমণি অধিকারী ও কল্যাণীর অম্বীকা রায় সহ পাঁচ বিধায়কের মধ্যে. দলীয় হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে তাঁরা তাঁদের ক্ষোভকে সামনেও এনেছেন ।পাশাপাশি,সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নতুন কমিটির প্রতি অনাস্থা দেখিয়ে গ্রুপ ছেড়েছেন বেশ কিছু বিজেপি নেতা ।
বিজেপি দলের একটি সূত্রের খবর,রাজ্য বিজেপি সাধারণ সম্পাদক (সাংগঠনিক) অমিতাভ চক্রবর্তী এই নতুন কমিটি তৈরি করে বর্তমান রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে দিয়ে তা অনুমোদন করিয়ে নিয়েছেন। আর নবগঠিত কমিটিকে নিয়েই দলে বেড়েছে ক্ষোভ।কমিটি গড়ার ব্যাপারে কলকাঠি নেড়েছেন অমিতাভ চক্রবর্তী এমনটা জানাজানি হতেই তিনি হয়ে উঠেছেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা সমর্থকদের টার্গেট। বিজেপি বিক্ষুব্ধ অংশের দাবি, নবগঠিত কমিটি আদতে একটি নিষ্ক্রিয় কমিটি। কমিটি গঠন ঘিরেই এরাজ্যে বিজেপি ভাঙ্গন শুরু হয়েছে, এমনটাই দাবী দলীয় একটি মহলের ।তাঁদের আরও দাবী -এই ভাঙন নিয়ে দিল্লিকে ভুল বোঝানোর চেষ্টাও চালানো হয়েছে বলে বিজেপি সুত্রে খবর। বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতৃত্বের সুত্র অনুযায়ী,এই পরিস্থিতির মধ্যে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে গাটছড়া বাঁধতে চলেছেন বনগাঁর সাংসদ তথা সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর। তাঁর সঙ্গে আছেন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপত্যাগী ৫ বিধায়ক। সঙ্গে আছেন বিজেপি ঘনিষ্ঠ মতুয়ারা। স্বাভাবিকভাবেই পক্ষপাতিত্ব ভরা নতুন কমিটি গঠনের পর রাজ্য বিজেপি একাধিক গোষ্ঠীতে বিভক্ত। রাজনৈতিক মহলের দাবী,বিজেপির নবগঠিত কমিটি নিয়ে দলীয় ক্ষোভের প্রকাশ ঘটেছে লোক্যাল ট্রেনের কুরুচিকর পোস্টার।নবগঠিত কমিটি নিয়ে বিজেপিতে ক্ষোভ ক্রমবর্ধমান।সময়ই বলবে, কোথাকার জল কোথায় গড়ায় ।।
More Stories
প্রসঙ্গ বাংলাদেশ : সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে রাস্তায় মতুয়ারা
রাজ্যসভার চেয়ারম্যান ধনকড়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব কংগ্রেসের! কী অভিযোগ হাত শিবিরের?
হাইকোর্টের রায়ে পঞ্চায়েতে ফিরেও ঘর ছাড়া আরাবুল