Home » দেখুন, ট্রেন-ভূত ধরতে পারল কি ময়নাগুড়ির পুলিশ?

দেখুন, ট্রেন-ভূত ধরতে পারল কি ময়নাগুড়ির পুলিশ?

সময় কলকাতা ডেস্ক : গা ছমছম করা রাতের ময়নাগুড়ি -দোমোহানী লাগোয়া মৌয়ামারি। অমাবস্যার কালো রাত,কনকনে ঠান্ডা।হাড় হিম করা ঠান্ডা আর নিস্তব্ধতার মধ্যে শিহরণ জাগাচ্ছে অশরীরীদের উপস্থিতি। কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, অপঘাতে মৃত্যু হওয়া ট্রেন যাত্রীরা প্রেতাত্মা হয়ে ঘুরছে রেলকামরার চারপাশে।নিশুতি রাতে ভেসে আসে আপার্থিব শব্দ, কান্নার ডাক। রাত গভীর হতেই ভূতের আতঙ্ক আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরছে ময়নাগুড়ি স্টেশন থেকে সামান্য দূরের দোমোহনীর মৌয়ামারি গ্রামের মানুষদের। মৌয়ামারির ভূতেদের বিচরণ জলে- স্থলে-আকাশে বাতাসে। আর এই ভূতেদের ধরতেই বেরিয়েছে পুলিশ।

তিন সপ্তাহ ধরেই তামাম মৌয়ামারি এলাকার মানুষ টের পাচ্ছে অশরীরী প্রেতাত্মাদের। ১৩ জানুয়ারি ময়নাগুড়ি-দোমোহনীর ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা গেছিলেন বহু মানুষ। এরপর থেকেই সেখানে মৃত মানুষের অতৃপ্ত আত্মারা নিজেদের যেন জানান দিচ্ছে।অন্ধকার গভীর হতেই তারা হাসছে, কাঁদছে।ক’দিন ধরেই ভূতের ভয়ে আর কেউ ঘেঁষছে না দুর্ঘটনাস্থলের আশেপাশে। আতঙ্ক সৃষ্টি করা ভূতেদের পাকড়াও করতে ভূতেদের পাড়ায় রাতে টহল দিতে হচ্ছে পুলিশকে। অতঃপর ভূতকে কব্জায় যদি আনা যায় ভেবে অমাবস্যার রাতকেই বেছে নিয়ে বিরাট অভিযান চালাল পুলিশ।মাঝরাতে দল বেঁধে পুলিশ প্রশাসন হল হাজির।

এলাকায় ভুতুড়ে ত্রাস কমাতে নামগান সংকীর্তন করে প্রেতাত্মাদের শান্তির আয়োজন করা হলেও ফল মেলে নি।তাই অশরীরীকে বাগে আনতে মধ্যরাতে ময়নাগুড়ি থানার আই সি তমাল দাস এবার সশরীরে সস্ত্রীক হাজির হলেন। ছিলেন ময়নাগুড়ির বিডিও শুভ্র নন্দী।রেল পুলিশের আধিকারিকরা ফায়ারব্রিগেডের পদস্থ কর্তাদের সঙ্গে নিয়ে ভূত ধরার অভিযানে সামিল হলেন।ভূত কে কাবু করা গেল কি?

রাতভর খোঁজ চলল ভূতের। বাঁশঝাড়, রেলের লাইন বরাবর সর্বত্র, এমনকি দুর্ঘটনাগ্রস্থ ট্রেনের ‘ভুতুড়ে ‘ বগির চারপাশে তল্লাশি চলল । অদ্ভুত ভাবে রাতের ময়নাগুড়ির ট্রেন লাইনের কাছাকাছি কোনও প্রাণী ভিড়ছে না। কুকুর শেয়াল ও ত্রিসীমানা মাড়াচ্ছে না। তবে কি তারাও টের পেয়েছে অশরীরী উপস্থিতি?

ভূত পাকড়াও দুরস্ত,কোনও ভাবেই ভূত দর্শন হয় নি পুলিশ প্রশাসনের। ভূতের ভয়কে কুসংস্কার আর মনের ভুল বলছেন তাঁরা। পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে।তাঁদের মতে ভূত নেই।অথচ এলাকার মানুষের গা-ছমছমে ভাবটাই কমছে না।

বেশ ক’ দিন ধরেই ভূতেদের ‘তান্ডবে’ ভীত গ্রামবাসী তবুও বলছেন ভূত আছেই । তাঁরা বলছেন, পুলিশ অত দলবল নিয়ে গেলে ভূতের দেখা পাওয়া যাবে না। তাঁদের মতে -ভূত আসে নিঃশব্দে, জনবিরল এলাকায় ভূত বিচরণ করে। সেজন্য রাতের নিস্তব্ধতায় অশরীরীদের গতিবিধি বোঝা যায়। এলাকাবাসীর ভীতি – আতঙ্ক দেখে মনে হচ্ছে রাতের ময়নাগুড়ি লাগোয়া মৌয়ামারি দ্বিতীয় বেগুনকোদর না হয়ে ওঠে!

About Post Author