তমশ্রী রুদ্র, সময় কলকাতাঃ ভারতে সম্প্রচারিত অ্যানিমেটেড চরিত্র গুলির মধ্যে ডোরেমন উল্লেখযোগ্য একটি নাম । “ডোরেমন” শব্দ টি এসেছে জাপানি শব্দ “দোরাএমোন্”থেকে । “দোরা” শব্দটি নেওয়া হয়েছে জাপানি শব্দ “দোরা নিকো” থেকে । জাপানি তে ‘নিকো’ শব্দের অর্থ বিড়াল । এই সিরিজে ডোরেমন হল কান হীন একটি বিড়াল । ডোরেমন সিরিজটি মূলত তিনটি ইভেন্টের সিরিজ । তিনটি সিরিজকে অনুসরণ করে হিরোশি ফুজিমোটো ডোরেমন তৈরি করেন । এক সময় তিনি একটি সিরিজ লেখার কথা ভাবছিলেন । তখন তিনি একটি যন্ত্র চেয়ে ছিলেন যা তার জন্য নতুন সিরিজের ধারনা নিয়ে আসবে । প্রথম দিকে সে তার মেয়ের কিছু খেলনা থেকে ধারনা নিতে চাইছিলেন ,ঠিক তখনই তিনি দেখেন দুটি বিড়াল নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করছে । এখান থেকেই হিরোশি ফুজিমোটো ডোরেমন কার্টুন এর ধারনা পেয়ে যান ।
ডোরেমন হল একটি কানহীন নীল রোবট বিড়াল । তাকে দ্বাবিংশ শতাব্দীর মাতসুসিবু কোম্পানি নির্মাণ করে । রোবটটির আসল নাম এমএস ৯০৩ । ডোরেমনকে নির্মাণ করার সময় দুর্ঘটনাবশত একটি অংশ হারিয়ে যায়। তাই সে অন্য রোবটদের থেকে কিছুটা আলাদা। সে সব সময় অগোছালো থাকে এবং কোনো কাজ সঠিক ভাবে করতে পারে না। তার কাছে একটি ফোরডাইমেনশাল পকেট আছে, যেখানে থাকে বিভিন্ন রকম গ্যাজেট। ডোরেমনের মালিক শিবাসি, ডোরেমনকে তার দাদা নোবিতার জীবনের উন্নতির জন্য অতীতে পাঠিয়ে দেয় । ধীরে ধীরে ডোরেমন নোবিতার সবচেয়ে কাছের বন্ধু হয়ে ওঠে । তারা মাঝেমাঝেই ঝগড়া করে আবার ডোরেমন সবসময় নোবিতাকে নিয়ে চিন্তিত থাকে । একবার একটি রোবট ইঁদুর ডোরেমনের কান খেয়ে ফেলে । তার পর থেকেই সে ইঁদুরকে ভয় পায় । এই সিরিজে দেখানো হয়েছে ডোরেমনের পছন্দের খাদ্য ডোরাকেক । তার একটি বোনও আছে,যায় নাম ডোরামি । ডোরেমন সবসময় ডরেমির প্রতি বিরক্ত বোধ করে । কিন্তু সে আবার ডোরামিকে খুব ভালোবাসে।
এই সিরিজের আরও একটি উল্লেখযোগ্য চরিত্র নোবিতা নোবি । এই সিরিজে নোবিতাকে দেখানো হয়েছে ডোরেমনের পরিপুরক চরিত্র হিসেবে । নোবিতা চতুর্থ শ্রেণিতে পাঠরত একজন অলস বালক । তার বয়স ১০ বছর । তার গায়ের রঙ ফর্সা , চোখে চশমা । পরনে লাল বা হলুদ পোলো শার্ট ও নীল বা কালো হাফপ্যান্টের সাথে কালো বা নীল জুতা । সে পড়াশুনা বা খেলাধুলা কিছুই পছন্দ করে না । দুর্বল হলেও সে বুদ্ধিমান তাই সে খুব সহজে ডোরেমনের গ্যাজেটগুলোর ব্যবহার খুব তাড়াতড়ি বুঝে যায় । নোবিতা একটি সরল বালক। নোবিতার কয়েকটি খারাপ অভ্যাস রয়েছে, সে দ্রুত ঘুমিয়ে পড়তে পারে । সে বিদ্যালয়ে দেরিতে যায়,পরীক্ষায় সাধারণত শূন্য পায় । তাই তার মা-বাবা ও শিক্ষক তাকে নিয়ে সবসময় উদ্বিগ্ন থাকেন ।
নোবিতা তার বিভিন্ন কাজের জন্য সবসময় ডোরেমনের উপর নির্ভরশীল । সে প্রায়শই ডোরেমনের গ্যাজেটগুলো দিয়ে অন্যায় কাজ করে । সে অন্যের উপকার করতে পছন্দ করে অনেক সময় দেখা যায় অন্যের উপকার করতে গিয়ে সে নিজেই বিপদে পড়ে । নোবিতা তার বন্ধু শিজুকাকে পছন্দ করে নোবিতার যেকোনো দুঃসময়ে শিজুকা তাকে সাহায্যও করে । এই সিরিজের গল্প অনুযায়ী নোবিতা বড় হয়ে একজন সফল মানুষে পরিণত হয় । শিজুকার সাথে নোবিতার বিয়ে হয় । এই সিরিজের শেষে দেখা যায়, একসময় ডোরেমনের ব্যাটারি শেষ হয়ে যায় । তার শ্রষ্ঠা শিবাসি জানায় ডোরেমন কে তৈরি করার সময় তার কিছু যন্ত্রাংশ হারিয়ে যায়। তাই ডোরেমন কে আর ঠিক করা যাবে না । ডোরেমন আর কখনও নোবিতার কাছে ফিরবে না । তবে অনেকেই বলে, বাস্তবে নোবিতা নবির জীবনীকে কেন্দ্র করেই ডোরেমন সিরিজটি তৈরি হয়েছে । ডোরেমন বাস্তবে একটি বিড়াল ছিল । একদিন নোবিতা তাকে রাস্তা থেকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যায় । একদিন একটি দুর্ঘটনায় বিড়ালটি মারা যায় । এরপর নোবিতা তার ঞ্জান হারায় এবং বহু বছর পর্যন্ত নোবিতা অঞ্জান থাকে । সেই সময় নোবিতা ডোরেমন কে নিয়ে একটি স্বপ্ন দেখে । পরে নোবিতা সুস্থ হয় এবং সে তার এই স্বপ্নের কথা একটি ডাইরিতে লিখে রাখে। তার এই লেখার উপর ভিত্তি করেই ডোরেমন সিরিজটি তৈরী হয় ।
More Stories
US Presidential Election: একে অন্যের বিরুদ্ধে তোপ, ট্রাম্প-কমলা বিতর্কসভায় উঠে এল কী কী বিষয়?
Deepika Padukone: গণেশ চতুর্থীর পরের দিনই মাতৃত্বের স্বাদ পেলেন দীপিকা পাড়ুকোণ
জোর করে চুম্বন : যৌন হেনস্থার অভিযোগে চিত্র-পরিচালক অরিন্দম শীল সাসপেন্ড