Home » ভাষা-শহীদ বেদীতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন ভারত-বাংলাদেশের, নিরাপত্তার ঘেরাটোপে আটকে গেলেন দু’দেশের নাগরিকরা

ভাষা-শহীদ বেদীতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন ভারত-বাংলাদেশের, নিরাপত্তার ঘেরাটোপে আটকে গেলেন দু’দেশের নাগরিকরা

মধুমিতা দাস, পেট্রাপোল, সময় কলকাতা :  ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সামনে রেখে উত্তর ২৪ পরগনার পেট্রাপোল সীমান্তে প্রতিবছরই সাড়ম্বরে পালিত হয় ভাষা দিবস । সমাগম হয় অগণিত মানুষের। মিশে যায় দুই বাংলার প্রাণের আবেগ। করোনার কারণে এ বছর অনুষ্ঠান অনেকটাই ছিল সাদামাটা। প্রাণের কথা বলার আবেগের মধ্যেও ছিল কড়া নিয়মের সীমান্ত শৃঙ্খল। নোম্যান্সল্যান্ডের অনেকটা আগেই বেনাপোলে বিজিবি এবং পেট্রাপোলে কর্মরত বিএসএফ জওয়ানরা আটকে দেয় ভাষাপ্রেমী সাধারণ মানুষদের। তবে এপার বাংলার দশজনের একটি প্রতিনিধি দল ও বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল সম্মিলিতভাবে পেট্রাপোল নোম্যান্সল্যান্ডে ফাঁকা গ্যালারির শহীদ বেদীতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করেন। পাশাপাশি ভারতের পক্ষ থেকে মিষ্টি তুলে দেওয়া হয় বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের হাতে।  

তবে  অনুষ্ঠানে বিতর্ক পিছু ছাড়ল না। একুশের আবেগে মথিত হয়ে সীমান্তে এসে ব্যারিকেডে আটকে গিয়ে বিএসএফ জওয়ানদের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন অনেকেই। ক্ষোভ উগড়ে দেন আমাদের ক্যামেরার সামনে। দুর্ব্যবহার ও অসহিষ্ণুতার অভিযোগ তোলেন তৃণমূল নেতা শিক্ষক সুকান্ত মাহাতো।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসের কথায়, ২০১১ সাল থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে দু’দেশ একত্রিত হয়ে অনুষ্ঠান শুরু করে। তবে এ বছর করোনার কারণে দু’দেশের সাধারণ মানুষ একত্রিত হতে না পারলেও আগামীতে আবারও দু’দেশ একসাথে মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করবে।

অপরদিকে বাংলাদেশের সাংসদ শেখ আফিলউদ্দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ভাষার টানে দুই বাংলা একত্রিত হয়ে মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করে কিন্তু এবছর সে পরিস্থিতি নেই। তবে তাঁর আশা, আগামীতে আবার দুই বাংলা একসাথে মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করবে। একই সাথে তিনি ভারত সরকারের কাছে আবেদন রাখেন, একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবস উদযাপনের জন্য ভারত সরকার যেন একটি পৃথক জায়গার ব্যবস্থা করে, যাতে দুই দেশের নাগরিক একত্রিত হয়ে অনুষ্ঠানে যোগদান করতে পারেন।প্রসঙ্গত, ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষার মর্যাদার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রাজপথে পাকিস্তানি বাহিনীর গুলিতে শহীদ হন সালাম-বরকত-রফিক-শফিক-জব্বারা। মাতৃভাষার জন্য এত বড় আত্মবলিদান সমগ্র পৃথিবীর ইতিহাসে একটি বিরলতম ঘটনা। অবশেষে ১৯৯৯ সালে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ইউনেসকোর ৩০তম অধিবেশনে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেয় ইউনেসকো। এরপর থেকে সমগ্র বিশ্ব একুশে ফেব্রুয়ারি সশ্রদ্ধায় নিজের মাতৃভাষার জন্য দিনটি পালন করে আসছে।

 

About Post Author