সানী রায়, সময় কলকাতা, ২৮ জুলাই : প্রায়শ শোনা যায় বইয়ের নেশা ছেড়ে, ধুমপান সহ নেশায় মেতেছে কিশোর প্রজন্ম। ইদানীং বিষয়টি বাড়াবাড়ির পর্যায়ে ঠেকেছে অনেক ক্ষেত্রে। পরণে স্কুল ইউনিফর্ম, পিঠে স্কুল -ব্যাগ, স্কুল পড়ুয়ার হাতে অবশ্য সিগারেট। এমনকি ছিলিম নিয়েও দিব্যি সুখ টান ! জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের ধুপগুড়ি ইন্সপেকশন বাংলোর ভেতরে প্রকাশ্য দিবালোকেই চলছে নেশা। ধুপগুড়ির স্কুল পড়ুয়ারা কোনপথে? প্রশ্নের মুখে পুলিশ-প্রশাসন থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষের নজরদারি।
ধূপগুড়ি সরকারি বাংলো যেন নেশার আখড়া। পান মশলা, গুটখা, সিগারেট তো আছেই,সঙ্গে দোসর গাঁজায়। তাতেই বুঁদ পড়ুয়ার দল। স্কুল পোশাকেই একেবারে ঠেক বানিয়ে বসছে নেশার আসর। চলছে দেদার সুখটান। সাংবাদিকের ক্যামেরা দেখেই রণে ভঙ্গ। গাঁজা ফেলে ছুট পড়ুয়াদের। কেউ উঠল পাঁচিলে, কেউ লুকালো গাছের আড়ালে। প্রশ্নের মুখে স্কুল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা।
ক্যামেরা তো আর সারাক্ষণ চলছে না! তাই থেমে থাকছে না নেশার টান। এদিকে আবার সরকারি নির্দেশ রয়েছে, কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্কুল চত্বরে বিক্রি করা যাবে না নেশার সামগ্রী। সেই নির্দেশ যেন শুধুমাত্র কাগজ-কলমে। নির্দেশিকাকে থোড়াই কেয়ার! হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে নেশার খাজানা -যা চাই তাই মিলছে ! স্কুলের পাশেই গজিয়ে উঠেছে কত সব নানা রঙের, নানা স্বাদের নেশার দোকান। এরকম ছবি দেখা যাচ্ছে ধূপগুড়ি জেলা পরিষদ ইন্সপেকশন বাংলোর ভিতরে। আস্ত সরকারি বাংলো যেন একেবারে নেশার আড়তে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়ারা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে স্কুল পোশাকেই চলে আসছে সেখানে। বসে যাচ্ছে ঠেক। পাঁচ-ছয় জনের দল করে বসছে আসর।
ধূপগুড়ি জেলা পরিষদ ইন্সপেকশন বাংলো থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরেই রয়েছে ধূপগুড়ি হাইস্কুল। অভিযোগ, সেখান থেকেই বেশিরভাগ পড়ুয়ারা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে নেশা করতে ঢুকে পড়ছে বাংলার ভিতরে। ক্যামেরা দেখে কয়েকজন পালিয়ে গেলেও একজনকে পাওয়া গেল শেষ পর্যন্ত। যদিও তার দাবি, সে এই মুহূর্তে স্কুলের ছাত্র নয়। কারণ, সে টিউশন পড়তে বেরিয়ে এখানে এসেছে। এদিন সে স্কুল থেকে আসেনি। তাই তাকে নাকি স্কুলের ছাত্র বলা ঠিক হচ্ছে না, বলে তার দাবি । ক্যামেরা দেখে মুখ লুকাতে দেখা যায় আরও দুই ছাত্রকে। চেপে ধরতেই একজন বলল, “নেশা করতে আসিনি। ঘুরতে এসেছিলাম। আমার বাড়ি জলপাইগুড়িতে।” স্কুল, আই কার্ড কোথায় প্রশ্ন করতেই উধাও দুই মাদক-আনন্দমার্গী পড়ুয়া।
ধুপগুড়ির স্কুল পড়ুয়ারা, বলা ভালো পড়ুয়াদের একাংশ তামাক ও গঞ্জিকার নেশায় আচ্ছন্ন। অথচ প্রতিবাদ নেই, নিষেধাজ্ঞাও যেন বজ্রু আঁটুনি ফসকা গেরো! স্কুলের আর কি, স্থানীয় মানুষের অধিকাংশের আর কি। ক্রোধ -বিস্ময় সামান্য মানুষের। তবে নেশার যোগানদারদের তো আনন্দের সীমা নেই। আর্থিক লাভ তো হচ্ছে! পরের ছেলে পরমানন্দ – যত গোল্লায় যাবে ততই আনন্দ। আনন্দের স্বাদ স্কুল পড়ুয়াদেরও মজ্জায় ঢুকছে ! নেশার মৌতাতে মেতে আছে কিশোর প্রজন্ম!
More Stories
বিজেপি সভাপতি নির্বাচন নিয়ে চাপানউতোর , দিল্লি গেলেন শুভেন্দু অধিকারী , সুকান্তর বাড়িতে বৈঠকে শুভেন্দু
দুর্নীতি থেকে সরাসরি সুবিধে পেয়েছেন যাঁরা, এ বার তাঁরাও তদন্তে আতস কাচের নিচে
নদীর জলে ক্যান্সারের বীজ!: আইসিএমআর