Home » Train Accident and Bridge Collapsed:’হ্যাটট্রিকের’ গুঁতোয় ওষ্ঠাগত প্রাণ

Train Accident and Bridge Collapsed:’হ্যাটট্রিকের’ গুঁতোয় ওষ্ঠাগত প্রাণ

বিশ্বজিৎ হীরা, সময় কলকাতা ডেস্ক, ১৭ অগস্টঃ এখন যেন সবকিছুতে একটা হ্যাটট্রিকের প্রবণতা চলছে। যেমন ধরুন  জলপাইগুড়ির কাছে রাঙাপানিতে একই জায়গায় তিনবার ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটল। দুইবার ট্রেন দুর্ঘটনার পর ওই রাঙাপানিতেই শুক্রবার রাতেও লাইনচ্যুত হয় মালগাড়ি। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রেলের নিরাপত্তা নিয়ে। আর কেন রাঙাপানিতেই দুর্ঘটনা ঘটছে তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এ তো গেল একটা ঘটনা যেখানে হ্যাটট্রিক হয়েছে।

এবার আসা যাক বিহারে। অবিশ্বাস্য লাগলেও সত্যি, বিহারের একটি ব্রিজ এই নিয়ে পরপর তিনবার ভেঙে পড়ল এবং সেটা নীতীশ কুমারের জমানায়। ফলে ব্রিজের গুণগত মান নিয়ে উঠছে প্রশ্ন, সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন, আর যে কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এই ব্রিজ তৈরি করছে তাদের কারিগরি দক্ষতা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। সুলতানগঞ্জ ও আগুওয়ানী ঘাটে গঙ্গার উপর ব্রিজ নির্মাণে কাজ শুরু হয়েছিল প্রায় নয় বছর আগে। বৃজটি নির্মাণের উদ্দেশ্য ছিল ভাগলপুর জেলার সঙ্গে খাগারিয়া জেলার মধ্যে সংযোগ স্থাপন। সুলতানগঞ্জ থেকে খাগারিয়া যেতে আগে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা সময় লাগত। এই ব্রীজটি তৈরি হলে সেই সময় প্রায় পাঁচ ভাগের এক ভাগ সময় নেমে আসত। ফলে ২০১৫ সালে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ৩.১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই ব্রিজটি নির্মাণের জন্য তৎকালীন বিহার সরকার ১৭১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। ব্রিজের কাজ সম্পন্ন করার জন্য নির্ধারিত সময় ছিল ৫ বছর। কিন্তু ৯ বছর অতিক্রান্ত এখনো পর্যন্ত ব্রিজের কাজ সম্পূর্ণ হয়নি আর তারই মাঝে বিগত দুই বছরের মধ্যে এই নিয়ে তিনবার ব্রিজের বিভিন্ন অংশ ভেঙে পড়েছে গঙ্গায়। ভাগলপুর এবং খাগারিয়া দুই দিক থেকেই ব্রিজের কাজ চলছিল, উদ্দেশ্য ছিল মাঝখানে এসে দুই দিকের ব্রিজকে সংযুক্ত করে দেওয়া। প্রথমবার ভেঙ্গে পড়ে ২০২২ সালে ভাগলপুরের দিকে অংশ। ২০২৩ সালে ভেঙে পড়ে খাগারিয়া দিকের ব্রিজের অংশ। আর শনিবার সকালে ভেঙে পড়ল ব্রিজের মাঝের অংশ। এদিন কী হয়েছিল সেই বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য গঙ্গা স্নান করার সময় আচমকায় বিকট শব্দে ভেঙে পড়ে ব্রিজের একটি অংশ। গঙ্গার জলে বিশাল আলোড়ন করে মুহূর্তের মধ্যে ব্রিজের অংশটি মিশে যায় গঙ্গায়।

আরও পড়ুনঃ Train Accident: ফের ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা! গভীর রাতে লাইন থেকে ছিটকে গেল সবরমতী এক্সপ্রেসের ২০টি কোচ

আরও পড়ুনঃ RG Kar Hospital case: আরজিকর কাণ্ডে এবার সিকিউরিটি সুপারভাইজার-সহ ১০ জনকে তলব CBI -র

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি ব্রিজ ভেঙে পড়া নিয়ে সরকারি পর্যায়ে সঠিক তদন্ত হওয়া জরুরী। এর আগেও দুইবার ব্রিজ ভেঙে পড়ার পর বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠেছিল খুবই নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে এই ব্রিজে  তৈরি করা হচ্ছে। অনেকাংশে নদীর বালিকেই ব্যবহার করা হয়েছে ঢালাইয়ের সময়। ফলে ঢালাই মজবুত হচ্ছে না এবং প্রযুক্তিগত সমস্যাও রয়েছে সেই অভিযোগে উঠেছিল। নেতাদের কাটমানি খাওয়া পাশাপাশি, অধিক মাত্রায় মুনাফা লাভের জন্য নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তারপরেও সেই ব্রিজ রয়ে গিয়েছে তিমিরেই। গঙ্গার উপর ব্রিজ হওয়ার পরিবর্তে বারবার ব্রিজ গঙ্গায় মিশে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ ভাগলপুর ও খাগারিয়া সাধারণ মানুষ। এখন দেখার এরপরেও ব্রিজ ভেঙে পড়ে কিনা। আর কত বছর বাদে এই ব্রিজের কাজ সম্পন্ন হয়। ইতিমধ্যেই তিনবার একই ব্রিজ ভেঙে পড়া নিয়ে তীব্র  আলোড়ন শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে ব্রিজ ভেঙে পড়ার ঘটনায় অনেকটাই ব্যাকফুটে এখন নিতিশ কুমারের সরকার। আর ব্রিজ ভেঙে পড়ার ঘটনা নিয়ে নিতীশ কুমারকে আক্রমণ শানাতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে বিরোধীরা

About Post Author