সানী রায়, সময় কলকাতা, ২৩ অগাস্ট :জলপাইগুড়ির পর্বতারোহীদের মনিরাং পর্বতশৃঙ্গ বিজয়
৬৫৯৩ মিটার অর্থাৎ ২১৬৩১ ফুট। হিমাচল প্রদেশের মনিরাং শৃঙ্গ হিমালয় তথা পৃথিবীর উচ্চতম শৃঙ্গগুলির মধ্যে পড়ে। সেই ১৯৫২ সালে কবে ডক্টর গ্রাফ প্রথম মনিরাং শৃঙ্গ জয় করেছিলেন আজও তার টানে ছুটে চলেছে অভিযাত্রীরা। এবার বিজয় পতাকা উড়ল ভারতের, জলপাইগুড়ির হাত ধরে মনিরাং শৃঙ্গ জয়।
স্কাই ইজ দ্যা লিমিট।পাহাড় যাঁদের টানে তাঁদের ঘরে থাকা দায়, ছুটে যান তাঁরা পাহাড়ের দিকে। কিন্তু তাই বলে একুশ হাজার ফুট! আবহাওয়ার প্রতিকূলতাকে জয় করে জলপাইগুড়ির অদম্য পর্বতারোহীরা দুর্গম পর্বতশৃঙ্গ জয় করলেন । বুধবার ২১ আগস্ট ২১৬৩১ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট দুর্গম মনিরং শৃঙ্গে শহরের অভিযাত্রীরা সকাল ১০ টা ৩০মিনিটে দেশের পতাকা এবং জলপাইগুড়ির বিজয় নিশান উড়িয়ে দিলেন সগৌরবে ।দলনেতা ভাস্কর দাস, জনক কোচ এবং বিজয় চক্রবর্তী সহ গাইড হর্স ঠাকুর এবং রাকেশ ঠাকুর শীর্ষে উঠতে সক্ষম হলেন, ওড়ালেন বিজয় পতাকা ।
বুধবার অভিযাত্রীরা ভোর ৩টে ৪৫ মিনিটে প্রায় ২০ হাজার উচ্চতায় তৈরী ক্যাম্প 4 থেকে শৃঙ্গের লক্ষে যাত্রা শুরু করে। চূড়ান্ত লক্ষের জন্য সাত জনের এক দল তৈরী হয়। দলনেতা ভাস্কর দাস সহ বিশাখা শর্মা, জনক কোচ, বিজয় চক্রবর্তী এবং গাইড হর্স ঠাকুর, সহকারি গাইড রাকেশ ঠাকুর এবং সোনাম দলে যোগ দেয়।
বরফের দেয়াল ভেঙে প্রায় মাইনাস ১৫ ডিগ্রি টেম্পারেচার এ তারা এগিয়ে চলে। প্রায় ২০, ৪০০ ফুট উচ্চতায় পৌঁছানোর পর বিশাখার শারীরিক অসুস্থতা শুরু হয়। দলনেতা সোনম কে দিয়ে তাকে নিচে ক্যাম্প 3 তে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন।
বরফের দেয়াল পেরোনোর পর শুরু হয় কঠিন পাথরের দেয়াল ভেঙে উপরে ওঠা। প্রায় হাজার মিটার দড়ি ফিক্স করা হয় এই দেয়ালে। ঠান্ডা হাওয়া সেই সঙ্গে ছোট ছোট পাথর উপর থেকে পড়ায় অভিযাত্রীদের শৃঙ্গের দিকে পৌঁছানো আরও কঠিন হয়ে যায়। অবশেষে সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে দলনেতা ভাস্কর দাস, জনক কোচ এবং বিজয় চক্রবর্তী সহ ত্ত্ত্তগাইড হর্স ঠাকুর এবং রাকেশ ঠাকুর শীর্ষে উঠতে সক্ষম হন।
উল্লেখ্য, মনিরাং পর্বত শৃঙ্গের লক্ষে নেচার অ্যান্ড ট্রেকার্স ক্লাব অফ জলপাইগুড়ি অভিযাত্রীরা গত ১২ আগস্ট পনেরো হাজার ফুট উচ্চতায় মুল শিবির বা বেস ক্যাম্প স্থাপন করেন। দুদিন লোড ফেরির পর ১৫ আগস্ট ক্যাম্প 1 স্থাপন হয় প্রায় ১৭হাজার ফুট উচ্চতায়। সেখান থেকে একদিন লোড ফেরির পর ১৭ আগস্ট প্রায় ১৮ হাজার ফুট উচ্চতায় ক্যাম্প 2 স্থাপন হয়। ১৯ আগস্ট ক্যাম্প 3 স্থাপন হয় ১৯ হাজার ফুট উচ্চতায়। শীর্ষারোহন এর সুবিধার জন্য ক্যাম্প 4 বা অ্যাডভান্স সামিট ক্যাম্প স্থাপন এর সিদ্ধান্ত নেন দলনেতা। ২০আগস্ট খারাপ আবহাওয়াকে হারিয়ে প্রায় ২০ হাজার ফুট উচ্চতায় পাহাড়ের খাঁজে খুবই এক ছোট জায়গায় কোনো রকমে একটি তাবু লাগানো হয়। বিকেল থেকে রাত দুটো পর্যন্ত সেই তাঁবুতে কোনো রকমে বসে রাত কাটানো হয়। আর তারপরেই শুরু হয়ে যায় চূড়ান্ত মিশনের জন্য স্নো বুট, আইস এক্স, হার্নেস, জুমার, ফেদার জ্যাকেট পরিহিত হয়ে বেরিয়ে যাওয়া। কঠিন পরিশ্রমের পর অবশেষে আসে কাঙ্খিত জয়।
ভারতীয় পর্বতারোহণ সংগঠন অনুমদিত, নেচার অ্যান্ড ট্রেকার্স ক্লাব অফ জলপাইগুড়ি আয়োজিত দুর্গম এই অভিযানের জন্য দুই জন মহিলা সদস্য সহ নয় জনের দলের নেতৃত্বে ছিলেন অভিজ্ঞ পর্বতারোহী ভাস্কর দাস। অন্যান্য সদস্যরা হলেন – আমিত দাস, জনক কোচ, সুজয় বনিক, পার্থ সারথী রায়, সৌম্যদীপ দাস, বিজয় চক্রবর্তী, বিশাখা শর্মা ও শম্পা সাহা। পার্থ সারথী রায় কে অসুস্থতার কারণে মানে গ্রামে পাঠানো হয়, বাকিরা সকলে ক্যাম্প 3 তে পৌছায়।
অভিযাত্রীরা শুক্রবার বেস ক্যাম্প থেকে রোড হেড মানে গ্রামে নেমে আসবে। মানালি -দিল্লী হয়ে তারা জলপাইগুড়ি ফিরবে বুধবার। ধাপে ধাপে পর্বত জয়ের পরে সিংহ হৃদয় ঘরের ছেলে মেয়েরা ফিরবে ঘরে।।
More Stories
OPTICAL ILLUSION: জিনিয়াসদের মত দৃষ্টিশক্তি থাকলে নিচের ছবি দুটি থেকে ৪৫ সেকেন্ডে ৩ টি পার্থক্য খুঁজে বের করুন
OPTICAL ILLUSION: মাত্র ১ শতাংশ নীচের দেওয়া ছবি দুটির মধ্যে ৩৫ সেকেন্ডে ৩ টি পার্থক্য খুঁজে বের করতে পেরেছেন, আপনিও চেষ্টা করে দেখুন
OPTICAL ILLUSION: শুধু মেধাবিদের জন্য, নিচের ছবি দুটি থেকে ৫০ সেকেন্ডে ৩ টি পার্থক্য খুঁজে ধাঁধাটির সমাধান করতে পারবেন?