Home » ঘুষ নেওয়া বন্ধ করুন নইলে ভিক্ষা করুন, বিএলআরও আধিকারিককে চামড়া তুলে দেওয়ার হুমকি বিজেপি নেতৃত্বের

ঘুষ নেওয়া বন্ধ করুন নইলে ভিক্ষা করুন, বিএলআরও আধিকারিককে চামড়া তুলে দেওয়ার হুমকি বিজেপি নেতৃত্বের

সানী রায়,সময় কলকাতা, ২৮ আগস্ট :  “ঘুষ নেওয়া বন্ধ করুন নইলে ভিক্ষা করুন। নইলে চামড়া তুলে নেওয়া হবে।”  ছিল স্মারকলিপি জমা দেওয়ার কথা। দেওয়া হল ভিক্ষা ও  হুঁশিয়ারি। মেখলিগঞ্জ বিএলআরও দফতরে বিজেপির স্মারকলিপি জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার প্রবল উত্তেজনা দেখা দেয়। মঙ্গলবার বিকেল তিনটের পরে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার নামে মেখলিগঞ্জ ব্লকের ব্লক ল্যান্ড রেকর্ডস অফিসে বিজেপি নেতা কর্মীরা মারমুখী মেজাজে ঢুকে কার্যত চড়াও হন আধিকারিক সুজন রায়ের ওপরে। শারীরিক নিগ্রহ বা সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর না করলেও দীর্ঘ সময় ধরে অকথ্য গালিগালাজ চলে। আধিকারিকের বুক পকেটে একহাজার টাকা গুঁজে দেওয়া হয়। বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছেন, ঘুষ নেওয়া ছাড়া কাজ হয় নি মেখলিগঞ্জ অফিসে। ভিক্ষার দান হিসেবে একহাজার টাকা দিয়ে আসা হয়েছে। তারা আরও জানান, ঘুষ না নিয়ে বিএলআরও আধিকারিককে ভিক্ষা করতে বসতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে  চ্যাংড়াবান্ধা বাজার মোড়ে। সরকারি আধিকারিক সুজন রায় জানিয়েছেন, বিজেপি নেতা -কর্মীদের দুর্ব্যবহারের তিনি মর্মাহত এবং তাঁর কার্যালয়ে যা হয়েছে তাকে কখনই স্মারকলিপি দান বলা হয়। সরকারি অফিসে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হয়েছে এবং তারপরে মানসিক চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে।

বিজেপি প্রতিনিধি দল  মঙ্গলবার বিএলআরও দফতরে ঢুকে বিএলআরও আধিকারিক সুজন রায় কে  গালাগালি দিতে শুরু করে। তাঁকে চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি বা ফাইনাল ওয়ার্নিং দেওয়া হয়েছে। ঘুষ নেওয়া বন্ধ করুন নইলে ভিক্ষা করুন। বেআইনি কাজ বন্ধ করতে হবে। নতুবা তাকে নগ্ন করে চামড়া তুলে নেওয়া হবে হুমকিও দেওয়া হয় বলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত দফতরের কর্মীরা জানিয়েছেন। বিজেপি নেতারা মেনে নিয়েছেন যে, তাঁরা শেষ বারের মত আধিকারিককে সতর্ক করে দিয়ে এসেছেন কারণ তাঁর দফতরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ভুরিভুরি।

অভিযোগ,দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে মেখলিগঞ্জ ব্লকের বিএলআরও দফতর। চলে দালালরাজ। উপঢৌকন এবং টাকা ছাড়া এই দফতরে কোনও কাজ হয়না।ঘুষ দিলে কাজ তো হয়ই এমনকি নীতিবহির্ভূত  কাজও করা হয়। আইন না মেনে জমির চরিত্র পাল্টে দেওয়ার কাজও করা হয়। তারজন্য দিতে হয় মোটা অঙ্কের ঘুষ। মেখলিগঞ্জ ব্লক বিএলআরও অফিসে পাঁচ বছর কার্যকালে সুজন রায়ের এরকম আইনবিরোধী কাজই হয় এবং এরকম ভুরিভুরি উদাহরণ তুলে এনেছে বিজেপি। এরকম অভিযোগের ভিত্তিতে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার কথা ছিল।

স্মারকলিপি জমা দেওয়ার কর্মসূচিতে বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী,জেলা সাধারণ সম্পাদক দধিরাম রায়,কনভেনার পবন ভাদানি,সঞ্জিব রায়,সুনির্মল গুহ,সন্তোষ ঠাকুর,শুভময় ঘোষ,আশেকর রহমান প্রমুখ ছিলেন।তারা যথারীতি অভিযোগ করতে থাকেন ,চ্যাংরাবান্ধার বিএলআরও দফতরে দালালরাজ, দুর্নীতির রাজত্ব । জমির মিউটেশন সহ যেকোনও কাজের জন্য টাকা নেওয়া হয়।দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক দধিরাম রায় বলেন,চ্যাংরাবান্ধার বিএলআর দপ্তরে ঘুষ ছাড়া কোনও কাজ হয়না এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তার প্রতিবাদে তাঁরা এদিন স্মারকলিপি জমা দিতে গেলেও দফতর প্রায় চারদিক থেকে বন্ধ রাখা হয়েছিল। পুলিশ মোতায়েন ছিল। ঢুকতে বাধা দেওয়া লক্ষ্য ছিল বিএলআরও আধিকারিকের। তাই চলতে থাকা দুর্নীতি বন্ধ করতে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার বদলে চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

সুজন রায় জানান, একটার সময় বিজেপি প্রতিনিধি দলের আসার কথা থাকলেও তাঁরা তিনটের পরে আসেন। তবুও তিনি দেখা করেছিলেন।তাই দেখা করার অনিচ্ছার প্রশ্নই উঠে না। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে আনা যাবতীয় অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।।

About Post Author