দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত ছেলে,স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে মিলছে না পরিষেবা, অসহায় দিনমজুর পরিবার

সময় কলকাতা ডেস্ক: দীর্ঘদিন থেকেই এক দিন-মজুরের ছেলে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত। প্রতিমাসে রক্ত পাল্টাতে হয়। উঠে যাচ্ছে গায়ের চামড়া। মৃত্যুর প্রতীক্ষায় দিন গুনছেন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের দিন-মজুরের ছেলে গণেশ সিং(২৫)। ছেলের চিকিৎসা করাতে সর্বশান্ত হয়ে গেছে পরিবার।

পরিবারের অভিযোগ, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলেও মিলছে না সেই কার্ডের সুবিধা। এমনকি এলাকার জন-প্রতিনিধি থেকে শুরু করে প্রশাসনিক কর্তা কাউকেই দেখা যায়নি এই পরিবারটির পাশে। ছেলেকে সামনে থেকে তিল তিল করে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে দেখছে অসহায় দিনমজুর বাবা-মা। এমনই অমানবিক চিত্র ধরা পড়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা থেকে ঢিল-ছোড়া দূরত্বে সিংপাড়ায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই পাড়ার বাসিন্দা শ্রীরাম সিং পেশায় দিনমজুর।তার ছেলে গণেশ সিং(২৫) দীর্ঘদিন ধরেই দুরারোগ্য ব্যাধি এপ্লাস্টিক এনিমিয়াতে আক্রান্ত। চিকিৎসকরা জানিয়েছে এটা এক ধরনের ক্যান্সার। এই অসুখে গায়ের চামড়া শুকনো হয়ে আস্তে আস্তে উঠে যায়। সুস্থ থাকতে গেলে প্রতিমাসে রক্ত পাল্টাতে হয়। তার সঙ্গে সঙ্গে চালাতে হয় ব্যয় বহুল ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা। দিনমজুর বাবার পক্ষে বর্তমানে চিকিৎসা চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে গিয়েছে পরিবার। এমনকি ঘর করার জন্য প্রধান-মন্ত্রী আবাস যোজনার যে টাকা পেয়েছিলেন তাও খরচ হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে দুই মেয়ে, স্ত্রী এবং এই অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন বৃদ্ধ দিনমজুর শ্রীরাম সিং। এই ঘটনা সামনে আসায় হরিশ্চন্দ্রপুরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।

এদিকে শাসকদলকে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছে জেলা বিজেপি সাংগঠনিক সম্পাদক রূপেশ আগারওয়াল। তার দাবি, ‘স্বাস্থ্য সাথী কার্ড মানুষকে ধোকা দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে। আসলে রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এই কার্ড দেখিয়েও মানুষ কোন পরিষেবা পাচ্ছে না। তার নমুনা এই গণেশ সিং।’

অন্যদিকে তৃণমূল বিধায়ক তজমুল হোসেনের দাবি, ‘বিজেপি ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেখিয়ে অনেকে চিকিৎসা হয়েছে। এই অসুস্থ ছেলেটির ব্যাপারে তারা এলাকার স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলবেন। যাতে খুব তাড়াতাড়ি ছেলেটির চিকিৎসার সুব্যবস্থা হয় সে ব্যবস্থা করা হবে।’ পাশাপাশি স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে কেন চিকিৎসা মিলছে না সে বিষয়ে খতিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন চাঁচল মহকুমা শাসক কল্লোল রায়।

About Post Author

Samay kolkata

See author's posts